অবতক খবর , রাজীব মুখার্জী, হাওড়া : জন্মভূমি তথা মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা মানুষের একটা স্বভাবজাত প্রক্রিয়া। প্রত্যেকেই নিজের মাতৃভূমিকে ভালোবাসে। নিজের জন্মভূমি,আপন মাটি ও মানুষকে ভালোবাসে।
সকলের মাঝেই থাকে আসল অস্তিত্ব ও শেঁকড়ের দিকে ফিরে যাওয়ার ইচছা ও প্রবল বাসনা। জন্মভূমির প্রতি নির্মোহ মমত্ববোধ ও ভালোবাসার মাধ্যমে প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ের আকুতি হলো নিজের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তার সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখার আকাঙ্খা। এই আকাঙ্খার প্রতিফলনের চেষ্টা সবার মাঝেই কম-বেশি থাকে। আপন মাটি, মানুষ ও মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা নিজের সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হচ্ছে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক মানুষের মূল বৈশিষ্ট্য।
এখানে উল্লেখ করবার একটা বিষয় হচ্ছে নিজ দেশে বসে থেকে নিজের জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ যতটা না দেখা যায় তার চেয়ে অধিক পরিমাণ অনুভব ও উপলব্ধির বহি:প্রকাশ ঘটে প্রবাসে অবস্থানরত: লোকদের মাঝে। প্রবাসের নিঃসঙ্গতার গ্লানিতে স্বদেশের প্রতি তাদের হৃদয়ের টান ও গভীর মমত্ববোধ যেন সবচেয়ে বেশি প্রবল ও প্রকট হয়ে দেখা দেয়। এটা ঠিক যে, বিদেশ-বিভূঁইয়ে অবস্থানকারীদের মাঝে দেশের প্রতি যতটা মায়া ও গভীর টান থাকে, স্বদেশে অবস্থানকারীদের উপলব্ধিতে ততটা আসার কথা নয়।
আর এই মাটির টানেই নিজে উপস্থিত না থাকতে পারলেও নিজের জন্মভূমির প্রতি টান এই করোনা অবহের মধ্যেও কোনো অন্তরায় হলো না এবারেও। একদিকে করোনা মহামারীর কারনে সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তে এই বছর উৎসব অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। অপরদিকে কোথাও কোথাও বিধি মেনে পূজা পাঠ চলছে আবার কোথাও কাটছাঁট করে অনুষ্ঠান চলছে।
vv
গতকাল ছিলো শ্রাবন মাসের শেষ সোমবার হাওড়া জেলার বিভিন্ন শিবের মন্দিরে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে হয়েছে শিব বন্দনা। আর এই অনুষ্ঠানের দুই দিন ধরে অনুষ্ঠানের সমস্ত খরচ পাঠিয়েছেন এলাকারই দুই প্রবাসী যুবক অভিজিৎ ও দেবজিৎ কোলে। কর্মসূত্রে তারা বর্তমানে ভিয়েতনামের লাউসে থাকেন। বিদেশে থেকেও নিজ জন্মভূমির প্রতি টান ও সেখানে মানুষদের প্রতি তাদের ভালোবাসা অপরিসীম। তাই সারা বছর বিপদে আপদে এলাকার মানুষের পাশে তারা থাকেন। ডোমজুড় নোনাকুন্ডু গ্রামে শিব মন্দিরের বাৎসরিক উৎসব উপলক্ষে গ্রামের সাত হাজার মানুষকে বাড়ীতে বাড়ীতে প্রসাদ পৌঁছে দিলেন তারা। করোনার কারনে এত লোক সমাগম হলে সংক্রামনের ভয় আছে তাই এবছর তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।