অবতক খবর , রাজীব মুখার্জী, হাওড়া :
এসো, বসো আমার উঠানে বুক ভরে নাও শ্বাস।শীতল পাটি বিছিয়ে দিবো তালপাখার বাতাস।
গ্রামবাংলার বহু বাড়িতেই আজও অতিথি আপ্যায়ন করতে এই শীতল পাটি বা মাদুরের চল এখনো দেখা যায়। গ্রামের বাড়ির দাও তে বসে গল্পগুজব সেই সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। আর সেই মাদুর শিল্পের জন্য বিখ্যাত হাওড়া জেলা। এখানের তৈরি এই মাদুরের কদর দেশ জোড়া কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের জেরে ধুঁকছে এই মাদুরশিল্প ও তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা শিল্পীদের পরিবার।
গ্রামীণ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লকের কিসমত কানুপটের ২০ টি পরিবার বছরভর মাদুর বুনে পেট চালায়। এই কানুপাট গ্রামেই মাদুরকাঠির চাষ হয়। বিভিন্ন সাইজের মাদুরকাঠি কিনে নিয়ে এসে বাড়িতে মাদুর বোনেন পরিবার পুরুষ থেকে মহিলা সকলেই। মাদুর বুনে স্থানীয় সুভাষ হাটে বুধ ও শনিবার বিক্রির জন্য নিয়ে যান রবি সেনাপতি, মোহন মাঝির মতো শিল্পীরা কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারণে দীর্ঘ লকডাউনের জেরে সুভাষ হাটে পাইকারী খদ্দেরদের দেখা নেই।
একদিকে লাফিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাঠির দাম। অন্যদিকে মাদুরের চাহিদা এখন একদমই কম। তাই বাধ্য হয়েই উদয়নারায়ণপুরের প্রত্যন্ত এই গ্রামের মাদুর শিল্পীরা আজ নিজস্ব পেশা ছেড়ে কেউ একশো দিনের কাজ করছেন আবার কেউ রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ে দিচ্ছেন। একদিকে বন্যার ভ্রুকুটি আর অন্যদিকে নিজস্ব পেশায় মন্দা—এই দুইয়ের জাঁতাকলে বিদ্ধ উদয়নারায়ণপুরের মাদুরশিল্পীরা।