অবতক খবর, সংবাদদাতা :: করোনার অতিমারির আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব ।ইতিমধ্যে ভারতবর্ষে করোনার রোগীর সংখ্যা 75 লক্ষ 74 হাজার 167 জন পৌঁছে গেছে। তাতে বর্তমানে এক্টিভ রুগীর সংখ্যা সাত লক্ষ 64 হাজার 535 জন । করোনা অতিমারীর জন্য দেশে মৃত্যু হয়েছে 1 লক্ষ 14 হাজার 902 জনের। এমন অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের দূর্গোপূজো উৎসবকে সামনে রেখে মণ্ডপে হাজার হাজার মানুষের ভিড় নিয়ে চিন্তা, উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং রাজ্যে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।
এমন অবস্থায় কঠিন অবস্থায় দাঁড়িয়ে ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের 34,000 পুজো কমিটিকে 50,000 করে অনুদান দিয়ে পুজো কে উৎসাহ প্রদান করার চেষ্টা করেছিলেন।
এমন অবস্থায় করোনা নিয়ে সর্তকতা বার্তার পড়েও কেরোল সরকার উৎসবে মেতে ওঠে আর তারপর রাজ্যে করুণা রোগীদের সংখ্যা কয়েক শ গুণ বেড়ে যায়। আর এইসব পর্যবেক্ষণ কে সামনে রেখে দূর্গোপূজো নিয়ে ঐতিহাসিক রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
রাজ্যের দুর্গাপূজা নিয়ে দায়ের করা একটি মামলায় শুনানি করতে গিয়ে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চ পরিষ্কার জানিয়ে দেয় যে রাজ্যের সমস্ত পূজো মন্ডপ কে কনটেইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
শুধু তাই নয় সেই পুজো মণ্ডপ বা প্যান্ডেল কে ফিতে দিয়ে ঘিরে রেখে বড় বড় করে লিখে নোএন্ট্রি’ বোর্ড লাগিয়ে রাখতে হবে। অর্থাৎ রাজ্যের কোন পুজো মণ্ডপে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারবেন না।
আসুন এবার দেখে নেই যে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা কি বলেছেন :-
1 প্রত্যেক মন্ডপের চারদিকে ব্যারিকেড তৈরি করে নো এন্ট্রি লিখে দিতে হবে
2 প্যান্ডেল বা মণ্ডপ থেকে 10 মিটারের মধ্যে কেউ সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারবে না যদিও ছোটখাটো মন্ডপের হলে এই দূরত্ব কম করে 5 মিটার অর্থাৎ 16 ফুট হতে হবে।
3 প্রত্যেক পূজো মন্ডপ কে কনটেইনমেন্ট জোন বলে গণ্য করা হবে।
4 পুলিশকে পুজো কমিটির সদস্যদের একটি তালিকা তৈরি করতে হবে তাতে সর্বোচ্চ 25 জন অথবা ছোটখাটো মণ্ডপ হলে 15 জনের বেশি মণ্ডপে থাকতে পারবেন না। তবে যারা থাকবেন সেই সদস্যদের তালিকা আগে থেকেই তৈরি করে রাখতে হবে। সাধারণ মানুষদের প্রবেশ নিষেধ।
5 রাজ্যের যে কত পুজো কমিটি অনুদান গ্রহণ করেছেন এই নিয়ম প্রত্যেকের জন্য প্রযোজ্য থাকবে।
6 পুজো কে কেন্দ্র করে রাস্তায় বা প্যান্ডেলের ভিড় নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট জানিয়েছে এ নিয়ে গাইড লাইন তৈরি করবেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র ও মুখ্যসচিব।
7 করুণায় মহামারী অতিথির জন্য রাজ্যের সমস্ত স্কুল-কলেজ পড়াশোনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খেলাধুলা ময়দান মাঠ সবই বন্ধ এমন অবস্থায় পূজাকে সামনে রেখে লাখো লাখো মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়বেন আর প্রশাসন চুপ করে বসে থাকবে কোন ভূমিকা থাকবে না তা হতে পারে না তাই আদালতের এই হস্তক্ষেপ।
8 আদালতের এই নির্দেশ কে কার্যকরী করতে পুলিশকে মাঠে নামতে হবে এবং পুজো কমিটির সদস্যদের এই বিধি-নিষেধ পালন করতে হবে।
9 কলকাতা হাইকোর্ট বিচারপতি রায় জানান যে রাজ্য সরকার 28 শে সেপ্টেম্বর পুজো নিয়ে বিধি-নিষেধ জারি করেছিল সেটা অবশ্যই তাকে স্বাগত জানানোর যোগ্য কিন্তু শুধু গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছে দিলে হবে না তাকে এক্সিকিউটিভ করতে হবে।
10 রাজ্যের পুজোমণ্ডপে কেমন ভিড় হলো। কেমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হলো। কোথায় কেমন পুজো হল কোথায় নিয়ম মানা হলো বা মানা হয়নি। সমস্ত রিপোর্ট লক্ষ্মী পুজোর চার দিনের মধ্যে রাজ্যের ডিজি ও পুলিশ কমিশনারদের হাইকোর্টে জমা দিতে বলেছেন বিচারকরা।
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশ কে স্বাগত জানিয়েছেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি জানান কোভিড মহামারীর মধ্যে দাঁড়িয়ে সরকার পুজো কমিটি গুলিকে অনুদান দিয়ে উৎসাহ দেবে আর করোনা নিয়ে ছেলে খেলা হবে তা রুখতে এই রায়। তিনি জানান আগে মানুষের জীবন পড়ে ধর্ম।