অবতক খবর, ২১ অক্টোবরঃ বর্তমান পরিস্থিতিতে বিষাদের ছায়ায় উৎসবের আলো ম্রিয়মাণ। এই করোনার আবহেও এক শ্রেণীর মানুষ যখন সব ভুলে পুজোর আমেজে মশগুল, সেখানে এর বিপরীত মেরুর গল্পটা কিন্তু অন্ধকারে মোড়া। এই করোনা অতিমারীর মধ্যে বহু খেটে খাওয়া মানুষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হকার ভাইয়েরা পরিস্থিতির শিকার হয়ে দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের জন্য এক অমানুষিক লড়াইয়ে সামিল হতে বাধ্য হয়েছেন। তাই দুর্গাপুজো, যা কিনা বাঙালির মহোৎসব, সেই উপলক্ষে নতুন জামা-কাপড় কেনা তাদের কাছে বিলাসিতামাত্র।
এই সামাজিক অবস্থানের অসমতা দূর করার লক্ষ্যে এবং এক নির্ভেজাল আনন্দ ছড়িয়ে দিতে গত রবিবার, ১৭ই অক্টোবর গয়েশপুর আশ্বস্ত ওয়েলফেয়ার সোসাইটি-র মূল শাখা তথা গয়েশপুর শাখার পক্ষ থেকে এক অভিনব কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। তাদের প্রয়াসের নাম “ষাটের দশকের মেলা”। হ্যাঁ! একটি মেলার মাধ্যমে তারা ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে সেই ষাটের দশকে, তবে কোনো টাইম মেশিনে চেপে নয় শুধুমাত্র মানুষের হাত ধরে। এই অভিনব মেলার মূল উদ্দেশ্য ছিল করোনা পরিস্থিতিতে যে সকল হকার ও ব্যবসায়ী সাময়িকভাবে তাদের অর্থ উপার্জনের পথ হারিয়েছেন, তাদের ও তাদের পরিবারের হাতে ষাটের দশকের বাজার দরের মূল্যে অর্থাৎ মাত্র ৫ টাকায় ও ১০ টাকায় নতুন জামা-কাপড় তুলে দেওয়া।
গয়েশপুর টাউন হলের মাঠে অনুষ্ঠিত এই মেলায় পুরুষ ও মহিলাদের নতুন জামা-কাপড়ের স্টলের পাশাপাশি ছিল পুরোনো জামা-কাপড় (বিনামূল্যে), স্যানিটারী ন্যাপকিন (প্যাকেট প্রতি ২টাকা), বাচ্চাদের জামা-কাপড় (বিনামূল্যে) এবং বই-খাতা ইত্যাদির স্টল। আশ্বস্তের “মায়ের রান্না” প্রজেক্ট যেখানে মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে যথাযথ হাইজিন মেন্টেন করে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তুলে দেওয়া হয়, তার স্টলও রাখা হয়। করোনা পরিস্থিতিতে সোস্যাল ডিসট্যান্সিং এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে সুষ্ঠুভাবে কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রায় ২০০টি পরিবার (পরিবার প্রতি ৪টি নতুন বস্ত্র)-এর মুখে টিম আশ্বস্ত এই উৎসবের মরসুমে হাসি ফোটাতে পেরেছে।
এই সংস্থার সভাপতি অঙ্কুশ সাহা বলেন যে মানুষের কাছ থেকে যে বিপুল পরিমাণে সাড়া পাওয়া গেছে, তাতে উদ্যোক্তারা আপ্লুত এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এইভাবেই টিম আশ্বস্ত সমাজকল্যাণের পথে এগিয়ে যাবে।