বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর,15 নভেম্বর 20 :: আজ কালীপুজো, আর আগামীকাল শুভ দীপাবলি। তাই এই দুদিন রাজ্য পুলিশ কর্তাদের পরীক্ষার দিন। তবে এই পরীক্ষায় তারা আদৌ পাশ করবে কিনা,এটা লাখ টাকার প্রশ্ন। কারণ পরীক্ষার আগে যে প্রস্তুতি নিতে হয় সেই প্রস্তুতি পুলিশকর্তাদের তেমনভাবে ছিল না বা নেননি। তারা বিনা প্রস্তুতিতে পরীক্ষা দিলে রেজাল্ট কি হবে এটা সকলেই জানেন।
তবে জেলায় জেলায় পুলিশ কর্তাদের দাবি সমস্ত রাজ্যজুড়ে পুলিশ পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত। কড়া ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা। এই পরীক্ষা কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আছে। রাজ্যের পরিবেশকে এই বিষাক্ত বায়ু থেকে রক্ষা করতে রাজ্যের সমস্ত ধরনের বাজিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একেবারে সোজা সুজি এই পরীক্ষা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে । বোমা, পেটো, চকলেট বোম, তুবড়ি, চরকি,রং মসলা থেকে শুরু করে লংকাবাজী বা কালিপটকা সবটাই।তাই রাজ্য কালীপুজো ও দীপাবলীর দিনগুলিতে রাজ্যবাসীকে এই বাজি ফাটানো, বাজি পোড়ানোর থেকে দূরে রাখতে আইনে সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।
দুদিন পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে বাজি ফাটানো হয় তাতে পরিবেশ দূষণ এতটাই বেড়ে ওঠে যে এক একটি এলাকায় এই বাজির বিষাক্ত ধোঁয়ায় অন্ধকারে ঢেকে যায়। নিঃশ্বাস নেওয়া পর্যন্ত দুষ্কর হয়ে ওঠে। তাই দু দিন দিনে কয়েক হাজার কোটি টাকার বাজি ফাটানো হয়। এই রাজ্যে আর এই বাজি গুলির বিষাক্ত ধোঁয়া প্রভাব থেকে যায় পরিবেশ কয়েকদিন ধরে।
রাজ্যে পরিবেশ কর্মীদের সংগঠন মিলে তৈরি হয়েছে সবুজ মঞ্চ। মঞ্চের সম্পাদক নব দত্ত জানান যে, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও যদি রাজ্যে বাজি ফাটানো হয় বা বন্ধ না হয় তার জন্য দায়ী থাকবে পুলিশ প্রশাসনের ঢিলেঢালা ভাব। তিনি জানান, পুলিশ প্রশাসন যদি নজরদারি করতো তাহলে এই বাজির বিষাক্ত ধোঁয়ার বিষক্রিয়া থেকে জনগণ ও পরিবেশকে রক্ষা করা সম্ভব হত। কিন্তু পুলিশ কর্তাদের ঢিলেঢালাভাবের জন্য প্রচুর বাজি ইতিমধ্যে বিক্রি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা জুড়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেছে এই নিষিদ্ধ বাজি।
আসুন এবার দেখে নেই হাইকোর্টের কি বিধি রয়েছে–
কলকাতা হাইকোর্ট এই প্রথম নির্দেশে রাজ্যের সমস্ত ধরনের বাজিকে নিষিদ্ধ করেছে। চকলেট বোমা থেকে ফুলঝুরি রং মসলা ও কালিপটকা পর্যন্ত সব একেবারে নিষিদ্ধ।
বাজি ফাটালে বা পোড়ালে আইনে সাজা হতে পারে। দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী বাজি পোড়ালে দু বছরের জেল হতে পারে।
তাছাড়া দেশের বিস্ফোরক আইন অনুযায়ী মামলা করতে পারে পুলিশ ও তাতে তিন বছরের জেল ও জরিমানা হতে পারে। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষ কে সমান ভাবে দোষী হিসেবে গণ্য করা হবে তাছাড়া কালীপুজো তে পুজোমণ্ডপে প্রবেশের নিিয়ে হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা থাকছে।
বাজি বিক্রি হলে বা পোড়ালে আপনি কিভাবে অভিযোগ জানাবেন—
কোথাও যদি বাজি বিক্রি হয় বা বাজি পোড়ানো হয় তাহলে আপনি ঘরে বসেই ফোনে অভিযোগ জানাতে পারবেন। জনগণ পুলিশকে অভিযোগ জানাতে পারবেন 100 তে কল করে। এছাড়াও অভিযোগ জানানো যেতে পারে স্থানীয় থানায়। তাছাড়াও কলকাতার জন্য লালবাজার পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ফোনে অভিযোগ জানানোর যেতে পারে,ফোন নাম্বার হচ্ছে ;- 100 এবং 9432610444, রাজ্য দূষণ পরিষদ তাদের নাম্বার অভিযোগ জানানোর জন্য প্রকাশ করেছে তা হচ্ছে – 033 233 53913, এছাড়াও টোল ফ্রি নাম্বার 180034533900 তে কল করে করা যাবে।
এছাড়াও পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছে তাদের যৌথ মঞ্চের তরফ থেকেও যে দুটি নাম্বার অভিযোগ করার জন্য দেওয়া হয়েছে তাহলো 943 220 9770, তাছাড়া আপনি ছবি তুলে বা লিখিত ভাবেও অভিযোগ জানাতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ করতে পারেন 983 1318265 তে।
রাজ্যে বাজির বিষক্রিয়া থেকে পরিবেশে দূষণ রোধে শেষ পর্যায়ে প্রস্তুতির পর রাজ্য পুলিশ প্রশাসন বাজি দূষণ রুখতে কতটা সফল হবে তা দুদিনের পরীক্ষার পর রেজাল্টে জানা যাবে। তবে অবতক-এর পক্ষ থেকে সকল পাঠক প্রিয় দর্শক বন্ধুদের কাছে বিনীত অনুরোধ সচেতন হোন। বাজি একেবারেই পোড়াবেন না, বহিষ্কার করুন এই বাজিকে। বাঁচান নিজের পরিবার ও নিজের আপনজনকে । পাঠক বন্ধু আপনারা প্রত্যেকেই অবগত আছেন যে রাজ্যে করোনার জন্য প্রতিদিন মৃত্যু-মিছিল অব্যাহত। তার ওপরে বাজি ফাটানো হলে পরিবেশ বিষাক্ত ধোঁয়ার ফলে শ্বাস কষ্ট আরো বাড়বে। মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবেননা সমগ্র মানুষকে। আর তাতে আমার আপনার পরিবারের সদস্যরাও হতে পারেন। তাই আসুন আমরা সকলে মিলে শপথ নেই:- এই কালীপুজো ও দীপাবলিতে বাজিকে একেবারে বলি নো, বাজিকে বলুন বাই বাই। অবতক খবর এর পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে কালীপুজো ও দীপাবলীর প্রীতি শুভেচ্ছা ও অনেক অনেক ভালোবাসা।