অবতক খবর , রেজাউল করিম , মালদা :- বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে শুটকি মাছের জুড়ি মেলা ভার। আর এই শুটকি যাঁরা চাষ করে থাকেন, এখন চরম সঙ্কটে তাঁরা। ক’দিন ধরে কুয়াশার জেরে সূর্যের দেখা নেই। ফলে মাছ শুকচ্ছে দেরি করে। আর তাতেই বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। যে মাছ শুকতে সপ্তাহ খানেক লাগে। সেটা ২-৩ সপ্তাহ লেগে যাচ্ছে।
দেরিতে শুকনোর ফলে শুকটি মাছের সাধারণ যে রঙ হওয়ার কথা, সেটা আসছে না। কুয়াশার জেরে ফ্যাকাশে রঙ দেখা যাচ্ছে। ফলে দাম পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তার ওপর মাছ শুকতে সময় লাগায় বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে তাঁদের। বাড়তি ২ সপ্তাহ মজুরদের টাকা দিতে হচ্ছে। আবার দামও কম পাওয়া যাবে। সব নিয়ে উদ্বেগে ব্যবসায়ীরা। ইংলিশবাজার ব্লকের মধ্যে কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতে কয়েকটি জায়গায় শুটকি মাছের প্রক্রিয়াকরণের কাজ হয়ে থাকে। লোকালয় থেকে দূরে বিস্তৃত এলাকা জুড়ে শুটকি মাছের শুকতে দেওয়া হয়ে থাকে।
সাধারণ ওই এলাকায় মানুষের আনাগোনা তুলনামূলক কমই বলা চলে। কারণ মাছের আঁশটে গন্ধে চারিদিক ভরে থাকে। জানা গেছে, বর্ষার সময় তাঁদের ব্যবসা সেরকম হয় না। সাধারণত অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত শুকটি মাছের প্রক্রিয়াকরণের আদর্শ সময়। তা ছাড়া এই সময় শুকটি মাছের বিক্রিও বেড়ে যায়। দিঘা থেকে মালদায় মাছ এসে থাকে। সামুদ্রিক ভোলা মাছ এনে শুটকির প্রক্রিয়াকরণ করা হয়ে থাকে। জানা গেল, লরিতে মাছ আসার পর তা পরিষ্কার করে ধুয়ে নেওয়া হয়। তারপর রোদে শুকতে দেওয়া হয়ে থাকে।
সপ্তাহ খানেকের মধ্যে শুকিয়ে গেলে প্যাকিং করে বিক্রির জন্য বাইরে পাঠানো হয়ে থাকে। ব্যবাসায়ীদের কাছে শোনা গেল, উত্তরবঙ্গ-সহ অসমে মালদা থেকে শুটকি মাছ গিয়ে থাকে। ক’দিন ধরে কুয়াশার জেরে রোদের দেখা নেই। এ ব্যাপারে বলতে গিয়ে এক ব্যবসায়ী তপন সরকার জানান, ‘আমাদের এখানে ভোলা মাছের শুটকি করা হয়। গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে আমাদের ব্যবসা। এই সময় শুটকির চাহিদা বেশি। কিন্তু কুয়াশার জেরে শুকতে প্রায় ২ সপ্তাহ বেশি লাগছে। রঙও ঠিকঠাক আসছে না। রঙ ঠিকঠাক না এলে দামও পাওয়া যায় না। তারমধ্যে বাড়তি খরচ হয়ে যাচ্ছে।’