অবতক খবর ,রেজাউল করিম , মেঠাবাড়ি :- করোনা আবহে এবার মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠান সূচি বাতিল করতে হয়েছে পরিবারকে। তার পরিবর্তে ১৮তম জন্মদিনটি একটু আলাদা করে পালন করলেন বাবা-মা। শহর থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে একটি আদিবাসী গ্রামে মেয়েকে নিয়ে হাজির হন তাঁরা। আদিবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শীতবস্ত্র ও মিষ্টি বিলি করলেন। এভাবে আচমকা উপহার পেয়ে বেজায় খুশি পুরাতন মালদা ব্লকের মিনাপাড়ার বাসিন্দারা। দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেন মেয়ে অন্বেষা বাগকে।
আদিবাসীদের মুখে হাসি দেখে তৃপ্ত তার পরিবার। জানা গেছে, অন্বেষার বাবা আশিস বাগ পেশায় গ্রন্থাগারিক। এছাড়া তিনি মালদা ডিস্ট্রিক্ট ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম ও মালদা মিডিয়াম ক্লাবের অন্যতম সংগঠক তিনি। ইতিমধ্যে ৭০ বার রক্ত দিয়ে ফেলেছেন অন্বেষার বাবা। লাবণী বাগ গৃহবধূ। বাড়ি ইংলিশবাজার শহরের হায়দারপুরের বঙ্গালটুলি লেন এলাকায়। অন্বেষা সবার্লো বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করে। সোমবার সে ১৮-তে পা দিল। পরিবারের সদস্যরা আগে থেকেই ঠিক করেছিলেন, এবার একটু অন্যভাবে গরীব সাধারনের মধ্যে পালনের উদ্যোগ নেন একমাত্র মেয়ের জন্মদিনটি। করোনা আবহে এমনিতে অনুষ্ঠানে মত নেই তাঁদের। তার পরিবর্তে আদিবাসীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন তাঁরা। তাঁদের পাশে থেকে সহায়তা করেছেন বাসুদেবপুর শুকানদিঘি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধ্রুব চ্যাটার্জি।
বাবা আশিস বাগ জানান, ‘করোনা আবহে এবার মানুষ রয়েছে অনেক কষ্টে। সচরাচর বাড়িতে জন্মদিন পালন করা হয়। এবার একটু আলাদাভাবে মেয়ের জন্মদিনটি পালন করি। আদিবাসীদের পাশে থাকতে পেরে খুব ভাল লাগছে। মূলত মেয়ে বড় হচ্ছে , সে ও গরীবের নানা দিক উপলব্ধি করুক এবং বুঝতে শিখুক আমরা সবাই মানুষ আমাদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নাই । সেবাপরায়নতা ও দুস্থদের মধ্যে এদিনের আনন্দঘন হয় এই অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান। ’ গ্রাম বাসিন্দাদের মধ্যে চেলকো হেমব্রম, মুকুল কিস্কু, শ্যামলী হাঁসদা, সাঞ্জলি সোরেনরা বলেন, ‘ আমরা কেউ ভাবতেই পারি নি যে, এভাবে কেউ এসে উপহার তুলে দিতে পারে। মেয়ের দীর্ঘজীবন কামনা করি আমরা। পরিবারের সবাই খুব ভাল থাকুক এই কামনায় করি।’