অবতক খবর,৮ মার্চ: আজ আমরা তন্ন তন্ন করে খুঁজি সবজি মাসিদের। সবজি মাসিরা কেউ চাকদা,কেউ আরংঘাটা,কেউ মদনপুর, কেউ শিমুরালি থেকে আসে। মুক্তা দেবী আসে, আসে মায়া দেবী, আসে শেফালী দেবী, আসে পারুল দেবী। মোটামুটি এই কয়জনকে আমরা খুঁজে পাই।

আর বাকি মাসিরা গেল কোথায়? লকডাউন তাদের জীবন বিধ্বস্ত করে দিয়েছে, বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। তারা এখন বেশিরভাগই তাদের বাড়িতে জীবনযাপন করছেন। স্থানীয় কোন জায়গায়, মাঠে-ঘাটে কাজ করছেন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন,বললেন মুক্তা মাসি।

মুক্তা মাসি কুমড়োর ফালি, পেঁপে,কচুশাক,লঙ্কা, কাঁচাকলা,থোর কতকি পসরা সাজিয়ে বসেছে। এমনই পসরা সাজিয়ে বসেছে অন্যান্য মাসিরা। তবে তাদের সবজিপাতি, আনাজপাতি অনেক কম। এসবই নির্ভর করে পুঁজির উপরে। কারোর হাজার টাকা পুঁজি, কারোর দুশো টাকা পুঁজি কারোর পাঁচশ টাকা পুঁজি এই নিয়ে তারা প্রতিদিন কাঁচরাপাড়া মন্ডল বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসেন।

আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবস এই কথাটি বলাতে তারাতো হকচকিয়ে যান। আন্তর্জাতিকই বা কি, শ্রমজীবীই বা কি! হয়তো নারী কথাটি শুনে কিছু বুঝতে পারেন। তবে যখন বলি নারী দিবস বলে কোন দিবস শুনেছেন? তারা হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। তখন পাল্টা মনে করিয়ে দেবার জন্য জিজ্ঞেস করি, স্বাধীনতা দিবস জানেন? বলে শুনেছি প্রজাতন্ত্র দিবস জানেন? শুনেছি, কিন্তু নারী দিবস তো শুনিনি। কেন রাজনৈতিক নেতারা আপনাদের এসব কিছু বলে না?

মুক্তা দেবী তো মুখ বেঁকিয়ে খেঁকিয়ে ওঠেন। বলেন, কেন ভোটের সময় তো তারা আসেন,তাদের দেখা যায়। তারা তখন কত কি বলে কোই নারী দিবসের জন্য সম্মান দিবস, মর্যাদা দিবস একথা তো বলে না! খালি তো ভোটের কথাই বলে।

এই প্রায় একই ধরনের কথা বেরিয়ে এলো অন্যান্য মাসিদের মুখ থেকে। তারা কোনদিনও নারী দিবস শব্দটি শোনেনি।তারা বলেন,আমরা আনাজপাতি বেচি, সবজিপাতি বেচি,বেচে যে কটা পয়সা পাই তা দিয়েই আমাদের পেটের দানাপানি চালাই। এটাই আমাদের কাজ। ওই দিবস টিবস আর আমাদের দরকার কি! ওই সব দিবস টিবস আমরা বুঝিনা। স্বাধীনতা দিবসের নাম শুনেছি, শুনেছি প্রজাতন্ত্র দিবসের নাম। ওই পতাকা দেখি, কিছু গান শুনি, মাইক বাজে। কিন্তু নারী দিবসের তো কোন গান শুনি নাই। নারী দিবস শব্দটাই শুনি নাই। তো নারী দিবস আবার কি? নারী! আমরা এই সমাজের আনাড়ি।