অবতক খবর,২৬ এপ্রিল: আজ দুপুর ১২টা নাগাদ কাঁচরাপাড়া হার্ণেট ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সামনে জমা হন স্কুলের বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক, অভিভাবিকারা। জমায়েত করে তারা ক্রমাগত বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এই বিক্ষোভের কারণ স্কুলের অব্যাবস্থা ও ব্যাপক হারে ফি বৃদ্ধি। এরই প্রতিবাদে তারা আজ স্কুলের সামনে ব্যানার, লিফলেট নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
তারা বলেন,স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রায় 30% হারে স্কুলের ফি বৃদ্ধি করেছে। গতবছর লকডাউনে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। অভিভাবকদের মধ্যে অনেকেই কাজ হারিয়েছেন,আবার অনেকের আয় ব্যাপক হারে কমে গিয়েছে। গত বছরের রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি আমরা। বিগত একবছর যাবত স্কুল বন্ধ,তবুও আমরা অনলাইনে সমস্ত ফি মিটিয়েছি স্কুল কর্তৃপক্ষকে।
আজ পরীক্ষার জন্য স্কুল খুলেছে। কিন্তু পরীক্ষা শেষে দুদিন বাদেই আবার বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু দিনের পর দিন স্কুল কর্তৃপক্ষ ফি বৃদ্ধি করে চলেছেন। এতদিন আমরা তার প্রতিবাদ করিনি। কিন্তু আজ প্রতিবাদ করা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই।আজ স্কুল খুলেছে,তাই আমরা স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছি।”
অন্যদিকে অভিভাবকরা আরো অভিযোগ করেন, অনলাইনে যে ক্লাস হচ্ছে,সেটাও ঠিকমত হচ্ছে না। অ্যাপসের মাধ্যমে যে নোটিফিকেশন আসে সেটাও সময়মতো আসে না। তাঁর ফলে আমরা এবং ছাত্র-ছাত্রীরা বিভ্রান্ত হচ্ছে।
অভিভাবকরা আরো অভিযোগ করে বলেন,”লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকাকালীন আমরা যে অনলাইন পেমেন্ট করেছিলাম,৫ মাসের পেমেন্ট করা সত্ত্বেও স্কুল খোলার পর ফের ওই পেমেন্ট স্কুলে জমা দিতে হবে, এমনই জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেখানেও একটা দুর্নীতি হয়েছে। কারণ আমরা অনলাইনে যে পেমেন্ট করেছি তার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এর কোন রেকর্ড নেই। যার ফলে আবারও সেই ফি স্কুলে জমা করতে বলেছেন কর্তৃপক্ষ।”
অন্যদিকে স্কুল যে সোসাইটি দ্বারা পরিচালিত হয়,সেই সোসাইটিতে রয়েছেন শহরের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ। তারাও এই বিষয়ে উদাসীন এবং ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে তাদের যে বক্তব্য কি তারা শুনতে অনাগ্ৰহী।
এমন অভিযোগ করেছেন তারা।
অভিভাবকদের অভিযোগ,”আমরা যখনই এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে যাই তখনই আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলি। সে সময় উপস্থিত ছিলেন স্কুলের অন্যতম কর্তৃপক্ষ খোকন তালুকদার, যিনি কাঁচরাপাড়া টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি। বিষয়টি নিয়ে তিনি বিক্ষোভরত অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেই আলোচনায় তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হয়। কারণ খোকন তালুকদার অভিভাবকদের যুক্তিসহকারে কোন বিষয় বোঝাতে পারেননি। যার জেরে অভিভাবকরা আরো উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।
সবশেষে প্রিন্সিপাল ও স্কুলের অন্যতম কর্তৃপক্ষরা সিদ্ধান্ত নেন যে, আগামী ২৯শে এপ্রিল অভিভাবকদের নিয়ে একটি বৈঠক করা হবে।
কারণ এই ভাবে কোন সমস্যার সমাধান বেরোবে না। সেই কারণেই এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বিক্ষোভরত অভিভাবকরা আমাদের অবতক-এর প্রতিনিধিকে জানান যে,আজ আপনারা এসেছেন বলেই স্কুল কর্তৃপক্ষ এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নাহলে এত দিন তারা আমাদের কথায় কোন গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না।
আগামী ২৯শে এপ্রিল অভিভাবকদের নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষক যে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে যদি কোন সমাধান না বের হয়, অথবা ফি না কমানো হয়, তবে আমরা স্কুলের অবস্থান বিক্ষোভ করব এবং কোন ফি স্কুলে আমরা জমা দেব না।
কারণ এটা কোন সরকারি স্কুল নয় যে তারা কোন সরকারি সহায়তা পাবেন। আমাদের ফি দিয়েই এই স্কুল চলে। আর আমাদের দাবি যদি না মানা হয়, আর আমরা যদি স্কুলে ফি দেওয়া বন্ধ করে দিই তাহলে স্কুলের অবস্থা শোচনীয় হবে।