অবতক খবর,৬ মে: বীজপুরের দুবারের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। তাঁর হারের পেছনে রয়েছে তাঁর দলেরই কর্মীরা। শুভ্রাংশু রায় যখন তৃণমূলে ছিলেন তখন তিনি বিজেপির পুরনো কর্মীদের প্রতি বহু অত্যাচার করেছেন। এমনই জানাচ্ছেন বিজেপি দলের পুরোনো কর্মীরা। তাদের কাউকে কোন মিছিল-মিটিংয়ে মারা হয়েছিল বা কাউকে কাঁপা মোড়ে ফেলে পেটানো হয়েছিল। এমনকি তিনি তৃণমূলের বিধায়ক থাকাকালীন বিজেপির সভা পর্যন্ত করতে দিতেন না। কিন্তু এসব কোন কিছুই ভুলতে পারেননি পুরনো বিজেপি কর্মীরা।

দলবদল করে তিনি বিজেপিতে এলেন এবং প্রার্থী হয়ে গেলেন। সেটা তারা কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি। তৃণমূল ছেড়ে যখন তিনি যখন গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন, সেই সময় পুরনো বিজেপি কর্মীদের বাদ দিয়ে তাঁর সাথে থাকা হাতে গোনা কয়েকটি ছেলেদের প্রাধান্য দিয়েছিলেন এবং তাদের নিয়েই প্রচার তথা দলের কাজকর্ম শুরু করেছিলেন। এতে পুরোপুরি কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন বিজেপির পুরনো কর্মীরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে অর্জুন সিং-কে জেতানোর পেছনে বিজেপির এই পুরোনো কর্মীদেরই ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু সেই পুরনো বিজেপি কর্মীদের তিনি অসম্মান করে কোণঠাসা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপির জন্ম লগ্ন থেকে যারা বিজেপি দলটি নিষ্ঠার সঙ্গে করে আসছেন, তারা শুভ্রাংশু রায়ের এই আচরণ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। তাই যথা সময়ে তারা তাদের প্রতিশোধ নিলেন।

এই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বহু পুরনো কর্মী তারা নিজের দলের প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে বিরোধী দল অর্থাৎ তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন, আর তার যথাযথ প্রমাণ তারা দেখিয়েছেনও। কিন্তু তারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। তারাই আমাদের জানিয়েছেন,”এই বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরেও যে আমরা স্বাধীনভাবে ঘরে রয়েছি,তার সমস্ত শ্রেয় সুবোধ অধিকারীর। আমরা বহু পরিশ্রম করে বীজপুরে দলটাকে এই জায়গায় এনেছি। কিন্তু কয়েকজন নেতা দল ত্যাগ করে বিজেপিতে ঢুকেই আমাদের কোণঠাসা করে দিয়েছেন। আর নব্য বিজেপিরা মাতব্বর হয়ে উঠেছিল। তবে দেখুন শেষমেশ কি হলো! আমরা স্বাধীন ভাবে বীজপুরে বিচরণ করছি। কিন্তু নব্য বিজেপিরাই আজ ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন, তারা ঘর থেকে বেরোতে পারছেন না।”

তাহলে বোঝাই যাচ্ছে, শুভ্রাংশু রায়ের ভরাডুবির জন্য বিজেপির এই পুরোনো কর্মীরাই দায়ী।

কাঁচরাপাড়া ১৮ নং ওয়ার্ডের প্রথম বিজেপি কাউন্সিলর তাপস বিশ্বাস (বাপি)। তিনি বিজেপি দলের অনেক পুরনো কর্মী। তিনিও নাকি এই বিধানসভা নির্বাচনে নিজের দলের প্রার্থী অর্থাৎ শুভ্রাংশু রায়কে নয়, বরং বিরোধী দলের তৃণমূল প্রার্থী সুবোধ অধিকারীকে ভোট দিয়েছেন। তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিওর মাধ্যমে প্রমাণ দিয়েছেন যে তিনি তৃণমূলকেই ভোট দিয়েছেন।
এইরকম আরো অনেক পুরনো বিজেপি কর্মীরাই এবার নিজের দলের প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন এবং সুবোধ অধিকারীকে জয়যুক্ত করেছেন। কারণ তারা ভুলে যাননি পুরনো দিনের কথা এবং তারা মেনে নিতে পারেননি দলবদলু শুভ্রাংশু রায়কে।