নাতাশা নারওয়াল, ৩২ বছরের মেয়ে। এনআরসি আন্দোলনের মেতেছিল দিল্লিতে। গ্রেপ্তার হয়ে দেড় বছর জেল খাটছে। তার বাবা মহাবীর নারওয়াল, পেশায় বিজ্ঞানী এবং বামপন্থী। যোদ্ধা মেয়েকে পেয়ে সে ছিল গর্বিত।ভিড়ে গিয়েছিল সংগ্রামী কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে। মৃত্যু হয়ে গেল তার করোনায় ৯ মে’২১। জেল খাটে নাতাশা, দেখতে পায়নি বাবার মুখ।
পৃথিবীর এখন গভীরতর অসুখ।
অবাধ্য মেয়ে
তমাল সাহা
আড়াল রাখি না
সোজা কথা বলি, তা হয় কি পদ্যময়?
নাতাশারা জেল খাটে ‘ছোড়ো কবিতা’
নাতাশারাই কবিতা, তাদের জন্ম হয়!
এসব হতে পারে কি কাব্যময় শব্দ–
সোচ্চার সংগ্রাম স্লোগান?
রে মানুষ!
এতেই তো লুকিয়ে জীবনের জয়গান।
গণআন্দোলন–এই শব্দবন্ধ কি
কবিতার পংক্তিতে যায়
না,এটা রাজনৈতিক লাইন?
কবিতাকে তাড়া করে রাষ্ট্রীয় আইন।
নাতাশার বাবা বিজ্ঞানী মহাবীর নারওয়াল
ভেঙে ফেলে জীবনের সাবেকি দেওয়াল।
যোদ্ধা মেয়েটিকে কাছে পেয়ে
তার কী আনন্দ উল্লাস!
কৃষক সংগ্রামে সেও মেতে ওঠে
আজ করোনা তার নিয়ে গেল লাশ।
নতাশা খাঁচাবন্দি এক পাখি
গ্রেপ্তার হয়ে দেড় বছর জেলে।
দেখতে পারেনি শেষযাত্রায় বাবার মুখ
যে মুখ চিরতরে গেল চলে।
আকাশ তলে সূর্য মাথায় রেখে
সব পাখি উড়ে যায়…
নাতাশা জানালা দিয়ে ছোট্ট আকাশ দেখে।
অবাধ্য জেদি একগুঁয়ে মেয়ে
কার ক্ষমতা তাকে রোখে?
কাল রাতে
নাতাশা জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে ডাকে,
আঙ্কল! দেবোনা মুচলেকা।
রাত তিনটে ঘুম ভেঙে যায়
উঠে পড়ি, তার জন্য এই লেখা।