অবতক খবর,৫ আগস্ট,মালদা:-প্রশাসনের উদ্যোগে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পাওয়া গেলেও চিকিৎসা করাতে লাগবে টাকা। তাই বাধ্য হয়ে পঙ্গু নাবালিকা মেয়েকে চিকিৎসা না করিয়ে গ্রামে ফেরত নিয়ে চলে আসলেন দিনমজুর বাবা।

ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ছাত্রক গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,এই গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর নূর সালাম। তার মেয়ে নূর ফাতেমা (৯) দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য অসুখে আক্রান্ত। মেয়ের এই জটিল ব্যাধির চিকিৎসা করার সামর্থ্য তার ছিল না।

এদিকে এই খবর সংবাদমাধ্যমে বেশ কয়েক-মাস আগে প্রকাশিত হলে তৎকালীন মহকুমা শাসক সঞ্জয় পাল, নূর সালামের বাড়িতে আসেন। সঙ্গে আসেন তৎকালীন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও পার্থ দাস। তাদের উদ্যোগে জেলা থেকে নূর সালামের মেয়ের জন্য স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করে দেওয়া হয়। সেই কার্ড নিয়ে কলকাতায় সরকারি হাসপাতালে যেতেই শুরু হয় যত বিপত্তি।

সেখানে চিকিৎসা কেন্দ্রে জানিয়ে দেওয়া হয় এই কার্ড দিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা সম্ভব না। তার মেয়ের জটিল ব্যাধি দূর করতে গেলে তাকে টাকা খরচ করতে হবে চিকিৎসার জন্য। সঙ্গে টাকা না থাকায় হতাশ হয়ে হরিশ্চন্দ্রপুরে ফিরে আসেন দরিদ্র দিনমজুর নূর সালাম।

তার বক্তব্য, এত ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রশাসন থেকে কার্ড পেয়ে তার কি লাভ হল?

তবে এদিন নূর সালাম বাড়িতে ফিরে এসেছেন খবর পেয়ে ছুটে যান তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান।
তিনি নিজের চোখে সমস্ত কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখেন। কেন চিকিৎসা করাতে পারলেন না, কেন কলকাতা থেকে চিকিৎসা না করে ফিরে আসতে হলো নূর সালাম কে? তবে তিনি পরিবারকে আশ্বাস দেন, অবিলম্বে নূর ফাতেমার চিকিৎসা বিনামূল্যে করা যায় সে ব্যবস্থা তিনি করবেন।

এদিন তিনি নূর সালামকে ফতেমার চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু আর্থিক সাহায্য করেন এবং সব রকম
ভাবে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তৃণমূল নেতা বুলবুল খান।

অন্যদিকে এই ঘটনার জেরে রাজনৈতিক রঙ লাগতে দেরী করেনি। ঘটনাকে ঘিরে জেলা বিজেপি শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি।
সঙ্গে জেলা বিজেপি নূর সালামের এই হয়রানির জন্য সম্পূর্ণ ভাবে জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় প্রশাসনকে দায়ী করেছে।

তাদের বক্তব্য, এলাকার বর্তমান বিডিও ঘুমিয়ে আছেন। এলাকার কোন সমস্যার সম্বন্ধে তিনি অবহিত নন।
এই নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির শুরু হয়েছে চাপানউতোর।

যদিও হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক বিডিও বিজয় গিরি এই ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে চাননি।