অবতক খবর,১৪ সেপ্টেম্বর,রুপম রায়,নদীয়া: নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের দূর্গাপু্রের পুকুর পাড়ার বাসিন্দা অমর বিশ্বাস, পেশায় একজন কৃষক। অমর বাবু তার বড় ছেলের বিবাহ দেন হাঁস খালির গাজনা কমলপুরে বাসিন্দা অসীম শিকদারের মেয়ে অদিতির সাথে।

অসীম বাবুর গাজনার বাড়িতে এক ভদ্রলোক আসেন নিজেকে তার রক্তের সম্পর্কে ভাই বাবলু শিকদার বলে পরিচয় দেন। এমনকি প্রতিটি পরিবারের নাম ঠিকানা মুখস্থ।এই কান্ড কারখানা দেখে আসিম বাবু সাদরে গ্রহণ করেন। ভাই বলে মান্নতা দেন বাবলু বাবুকে। যেমন কাজ, তেমনি ফল হাতে নাতে। বাবলু বাবু দাদার বাড়িতে এসেই বাজার করা, জিনিস পত্র আনা সবই করে পরিবারের সকলের মন জয় করে নেন।

অমর বাবু এভাবে খরচ করতে বারণ করলে বাবলু বাবু জানান, আমার স্ত্রী মারা গেছেন। একমাত্র মেয়ে।সুনিতার বিয়ে দিয়ে এখন একাকী জীবন। আমি ঠিক করেছি আমার অঘাত অর্থ খরচ করব আর আত্মীয় স্বজনের কাছে যাব।এ ব্যাপারে তার কাজে কেও যেন ব্যাঘাত না ঘটায়। দুদিনের মধ্যে পরিবারের সকলের নয়নের মণি হয়ে যান বাবলু বাবু। এই কথা অমর বাবু তার মেয়েকে ফোনে জানান, দীর্ঘদিন পর তোর এক কাকা এসেছে।এই কথা শুনে মেয়ে বাবাকে জানায়, তুমি কাকাকে আমার শশুর বাড়ী নিয়ে এসো। কাছাকাছি বাপের বাড়ি হওয়ায় অমর বাবু মেয়ের কথা ফেলতে পারেননি।আর মেয়ে এর আগে কোন দিন কাকাকে না দেখায়, দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে।মেয়ের ইচ্ছা পূরণ করতে সটান কাকাকে নিয়ে হাজির । নতুন কাকাকে পেয়ে অদিতি আনন্দে আত্মহারা,ঠিক একই ভাবে নতুন বেয়াই পেয়ে অমর বাবু আনন্দে আত্মহারা। অমর বাবুর পরিবারে উৎসবের চেহারা নেয়।পরের দিন সকালে অসীম বাবু বাড়ি চলে গেলেও বাবলু বাবু থেকে যান।একইভাবে পরিবারে বাজার করা, জিনিস পত্র কিনে অল্প সময়ের মধ্যে সকলের নয়নের মণি হয়ে যান। কথায় কথায় বাবলু বাবু জানতে চান বেড়ার ঘরে বাস করছেন কেন? পাকা ঘরের ছাদ দেননি কেন?অমর বাবু জানান টাকার অভাবে সম্ভব হয়নি।পাট উঠেছে পাট বিক্রি করে ছাদ দেবার চেষ্টা করব।বেয়াইয়ের কথা শুনে বাবলু বাবু জানান টাকার অভাব নেই ঘরে ছাদ দেবার জন্য তৈরি হন। স্বাভাবিক ভাবেই অমর বাবু পাট বিক্রি করে দেন। একলাখ ষাট হাজার টাকার পাট বিক্রি করেন। ছাদের প্রস্তুতি নেন। এমনকি বাবলু বাবু অমর বাবুকে বাজারে নিয়ে গিয়ে নীজের আঁধার কার্ড দিয়ে মোবাইলের সিম তুলে দেন। এই ভাবে ১২ টা দিন অমর বাবুর বাড়িতে ছিলেন নতুন বেয়াই। হঠাৎ বাবলু বাবু বলেন, আমায় দুদিনের জন্য বনগাঁ যেতে হবে। ঐখান থেকে টাকা নিয়ে আসবো ছাদ ঢালাইয়ের জন্য।অমর বাবু নতুন বেয়াইকে মাজদিয়া রেল স্টেশনে ট্রেনে তুলে দিয়ে আসেন। বাড়ি ফিরে মাথায় হাত। বাক্সতে দুই লক্ষ তিরিশ হাজার টাকা উধাও। বাবলু বাবুকে ফোন করে, ফোনের সুইজ বন্ধ।অমর বাবুর পরিবারে বেদনায় ভারাক্রান্ত।

বৌমা অদিতি বিশ্বাস জানান, শশুর মশাই টাকার শোকে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন, আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন। ওনার দুই ছেলে তারাও বাইরে সেন্টারিঙের কাজে গিয়েছেন।এখন কি করব ভেবে উঠতে পারছিনা। এলাকাবাসী এই ঘটনায় হতবাক।অমর বাবু কৃষ্ণগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ জানাতে যান। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ আবেদন নেননি। ফলে আরও দুশ্চিন্তাই হতাশা গ্রস্থ পরিবার। তবে পুলিশ যেভাবে অভিযোগ নিলেন না তাতে প্রশ্ন উঠছে আইন কি আদৌ মানুষের জন্য।