অবতক খবর,১৮ সেপ্টেম্বর,রুপম রায়/অঞ্জন শুকুল,নদীয়া: নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বানপুর মাটিয়ারী গ্রাম পঞ্চায়েতের কুলপাড়া গ্রাম। গ্রামটি তারকাটার ওপারে ভারত ভূখণ্ডে অবস্থিত। এই গ্রামে বাস করেন মনসুর আলী মন্ডল। পেশায় দিন মজুর। তার চার মেয়ে স্বামী স্ত্রী নিয়ে সংসার। ইতি মধ্যেই তিন মেয়ের বিবাহ দিয়ে দিয়েছেন। পরিবারে এখন মনসুর স্ত্রী গোলেবিবি মন্ডল ও ছোট মেয়ে সোভা খাতুনকে নিয়ে বাস। সোভা বানপুর হাই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী।
মনসুর বাবু বলেন,আজ থেকে ১১ মাস আগে সন্ধ্যা বেলায় আমার মেয়ে অসুস্থ বোধ করে। সকলে দেখে ওঝা বাড়ি নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন। সাধারণত আমাদের কুলোপাড়ার কেও অসুস্থ হলে গেটে গিয়ে বি এস এফকে জানালে তারা কোম্পানি কমান্ডারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গেট খুলে অসুস্থ ব্যাক্তিকে হাসপাতালে নীজেদের গাড়ি করে নিয়ে যান,চিকিৎসাও করান। কিন্তু আমার মেয়ের ঐ ধরনের লক্ষণ না থাকার ফলে অনেকেই অনুমান করে ওঝা বাড়িতে নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন। মেয়ের মধ্যে অস্বাভিকতার লক্ষণ দেখে সকলের সন্দেহ হয় মেয়েকে ভুতে ধরতে পারে। পাড়া প্রতিবেশীরা জানায় ওকে ওঝা বাড়ি নিয়ে যাবার জন্য। আমার স্ত্রী দেরি না করে মেয়ে সোভাকে নিয়ে পাশের গ্রাম গয়েসপুর সংলগ্ন বেনিপুর গ্রামে ওঝা বাড়িতে নিয়ে যায়। যেমন কাজ তেমনি ফল। মা ও মেয়ে যখন যাচ্ছেন তখন তাদের খেয়াল ছিল না পাসাপাসি দুটি গ্রাম হলেও বর্তমানে দুটি দেশের। স্বাভাবিক ভাবেই প্রহরারত বাংলা দেশের বি জি বি এর নজরে আসে। বাংলাদেশে প্রবেশের বৈধ কোনো কাগজ না থাকার কারণে তাদের গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তারা বাংলাদেশ জেলে বন্দি। অভাবের সংসারে মনসুর বাবু কোনো ভাবেই ভেবে উঠতে পারছেন না কি ভাবে স্ত্রী ও মেয়ের সাথে যোগাযোগ করবেন।
তাই তিনি ভারত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সাথে সাধ্য মতোন যোগাযোগ করেছেন। আর অবাক হয়ে চেয়ে থাকেন ওই গ্রামের দিকে । কাওকে আসতে দেখলেই ভাবেন স্ত্রী ও মেয়ে ফিরে আসছেন। কিন্তু স্ত্রী ও মেয়ে ফেরেন নি আজও। স্ত্রী ও মেয়ের অপেক্ষায় থেকে থেকে ক্লান্ত। আর তাদের ছবি দেখেন আর কান্নায় চোখের জলে বুক ভাসান।
ভারত সরকারের কাছে তার কাতর আবেদন আমার স্ত্রী ও মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।