রেললাইনের ধার,গঙ্গার পার জুড়ে শত শত কলকারখানা বন্ধ,অথচ দুর্গার উৎসবে মেতেছে বাংলা।
অন্য দুর্গা– চার
বন্ধ কারখানায় দুর্গা
তমাল সাহা
তুমি দেখো
পেঁজা তুলোর মতো মেঘের উড়ান,
ঝকঝকে রোদ্দুর কোলে নিয়ে
ঝুঁকে আছে স্বচ্ছ নীল আকাশ।
আমি দেখি
রেললাইনের ধার, গঙ্গার পার—
বন্ধ কারখানার জং ধরা বিশাল গেট,
কঙ্কালের মাথার মতো মরচে ধরা তালা—
সেঁটে আছে গেটের গায়ে, যেমন ঝুলে স্থির হয়ে থাকে ফাঁসবন্দি দেহ।
ঝাঁপ ফেলা ইউনিয়ন দপ্তরের মাথায়
এখনো উড়ছে লাল ঝান্ডা,
সূর্যের তাপে বিবর্ণ তার রঙ,
আরো কিছু বলার আছে,
তাই লিখে রাখি এবং…
ট্রেনে যেতে যেতে দেখি
জীর্ণ প্রাচীরের ওপারে এখনও পড়ে আছে গাদামারা লোহার স্ক্র্যাপ,স্তব্ধ চিমনি, শব্দদূষণহীন যন্ত্রপাতি-মেশিন।
স্ক্র্যাপের ফাঁকফোঁকর দিয়ে মাথা উঁচিয়ে ফুটে আছে অসংখ্য কাশফুল।
উমাকে স্বাগত জানায় উৎসবের আশ্বিন।
শুনশান শেড,কোথায় গেল দুনিয়ার মজদুর,কুলি-কামিন?
উমা ফি-বছর বাপের বাড়ি আসে।
দুর্গতিনাশিনী!অসুরনাশিনী!নমস্তস্যসৈ নমস্তস্যসৈ বলে পুরোহিত কন্ঠ দুরন্ত চেঁচায়।
দায় তো দূরের কথা,
বন্ধ কারখানা খোলার কোনো চিন্তা নেই মায়ের মাথায়।
চারদিন মহোৎসবে খেয়ে দেয়ে নিশ্চিন্তে শ্বশুর বাড়ি ফিরে চলে যায়।
একশ আটটি নীলপদ্ম দিয়ে পুজো করো!
এই নাকি তোমার মা!
বিন্দুমাত্র জানেনা—
সন্তানের দুঃখ-কষ্টের সীমা পরিসীমা।
মা! মা!মা!
কান্না জুড়ে দিলে মা কি শিশুকে স্তন না দিয়ে পারে?
এই মা এলে তো তোমার হাত শূন্য
পুঁজিপতি সওদাগরের মুনাফা বাড়ে…