অবতক খবর,রুপম রায়,নদীয়া,১৯ অক্টোবর: সমাজকে বার্তা দিতেই কৃষ্ণ গঞ্জ ব্লকের শ্যামনগর গ্রামে এই আয়োজন। মেয়েকে লক্ষ্মী রুপে পূজা করেন পঞ্চায়েত অফিসার দম্পতি।এসো মা লক্ষ্মী,বসো ঘরে। ।আমার এ ঘরে থাকো আলো করে ।আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা । কন্যাই সম্পদ । বিশেষ করে মায়ের কাছে তাদের সন্তানই মুল সম্পদ । সমাজের কাছে এমনি বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়ে নিজের কন্যাকে লক্ষীরুপে পূজা করলেন এক পঞ্চায়েত অফিসার দম্পতির ।১০ বছরের শিশু কন্যাকে রিতিমত লক্ষ্মীরুপে সাজিয়ে ব্রাহ্মণ ডেকে পূজা করলেন পঞ্চায়েত অফিসার পরিবারের লোকজন । মঙ্গলবার সন্ধা ৭টা নাগাত নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের শ্যামনগর গ্রামে এমনি এক বাতিক্রমী লক্ষী পূজা হল ।ওই পূজা দিয়ে পুরোহিত শ্যামল মুখার্জি জানিয়েছেন মেয়েরাতো মায়েরই জাত ।তাই এখানে কুমারী মেয়ের লক্ষী পূজা করা হল । সম্পুর্ণ শাস্ত্রমতে কুমারী কন্যাকে এখানে লক্ষী রুপে পূজা করা হয়েছে । কৃষ্ণগঞ্জের দুর্গা পুরের মিতালী বিশ্বাসের বাপের বাড়ি । কর্ম সুত্রে বনগাঁ গ্রাম পঞ্চায়েতের একজিকিউটিভ অফিসার ৷ দেবাশীষ বিশ্বাস হিজুলি গ্রাম পঞ্চায়েতের একজিকিউটিভ অফিসার । দেবাশীষ বিশ্বাসের সাথে মিতালী বিশ্বাসের বিবাহ হয় শ্যামনগরে । বর্তমানে পরিবারে বাবা অমল বিশ্বাস,মাতা চম্পা বিশ্বাস,পুএ দেবাশীষ বিশ্বাস,পুএবধু মিতালী বিশ্বাস, নাতনি দেবাদৃতা ও নাতি দেবা প্রিয়ন বিশ্বাস ও মেয়ে প্রিয়ালি বিশ্বাস কে নিয়ে সুখের সংসার ।এই বাড়িতেই ঘটা করে দেবাদৃতাকে লক্ষী রুপে পূজা করা হয় । দেবাশীষ বাবু বলেন আমরা পঞ্চায়েত অফিসার হয়ে দেখতে পায় বিভিন্ন জায়গায় কন্যা সন্তানকে অনেক মানুষ ই অবহেলা করে থাকেন ।পুএবধু হিসেবে অন্যের কন্যাসন্তানকে নিজের ঘরে আনার পর তার প্রতি অনেকেই অত্যাচার করেন ।আমরা মনে করি পুএ ও কন্যা সন্তান উভয়েই সমান ।অন্যদিকে দেবাদৃতার মা মিতালী বিশ্বাস বলেন কর্মক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই কিভাবে মেয়েদের উপর অত্যাচার হয়, সেই অভিজ্ঞতা থেকে নিজেরা চিন্তাভাবনা করি, কন্যাকে বাঁচাতে হবে ৷ অনেক পরিবারই যানেনা মেয়েরা সমাজের কতবড় সম্পদ । তিনি আরও জানান আমার মেয়ে জন্ম নেবার পর থেকেই আয়, উন্নতি সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে ।তাই আমরা স্বামী স্ত্রী মিলে সিদ্ধান্ত নিই এবছর মাটির প্রতিমা বাদ দিয়ে নীজের মেয়েকেই লক্ষী রুপে পূজা করব ,তাই করলাম ।আমরা চাই প্রতিটি মানুষই যেন নিজেদের কন্যাসন্তানকে মাতৃরূপে সম্মান করেন ।দেবাদৃতার দাদু বলেন আমিতো ভাবতেই পারছি না এটা আমার দিদি ভাই ।লালশাড়ি, মাথায় মুকুট গলায় মালা , একহাতে পদ্ম, কাঁকে ছোট কলস মুদ্রা দেবদৃতাকে সত্তিই লক্ষীর মতোই লাগছিল । ঠাকুমার হাতে ফুল বেলপাতা নিয়ে অঞ্জলীর মন্ত্র উচ্চারণ করতে গিয়ে দেখা গেল কালো ফ্রেমের চশমা দিয়ে অশ্রু ঝরে পড়ছিল, তিনি ভেবে উঠতে পারছিলেন না,এই সেই আদরের নাতনি,যে মনের অজান্তেই দশ বছরে পড়েছে । বিধাতার লিখনে আজ তাকে লক্ষী রুপে পূজা করছেন সে একদিন অন্য সংসারে চলে যাবে, তখন তারা কিভাবে আদরের নাতনিকে ছেড়ে থাকবেন । অন্যদিকে একমাত্র পিশি প্রিয়ালি বিশ্বাস বলেন সমাজসেবা করতে, করতে পথচলা শুরু । যেখানে মেয়েদের ওপর অত্যাচার হয় সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়ি । বাড়ীর মেয়েকে লক্ষ্মীরুপে পূজা করতে পেরে আমরা ধন্য । পূজার সময় দেবা দৃতার হাঁসি খুশি মুখ দেখে জানান দিচ্ছিল স্বয়ং লক্ষী দেবির আবির্ভাব বিশ্বাস বাড়িতে । জীবন্ত লক্ষী কে দেখতে ভীড় করে বহু মানুষ । আমরাও তাদের এই উদ্যোগ কে কুর্নিশ জানায় ।