অবতক খবর,৩১ অক্টোবর: কথায় বলে “ধর্ম যার যার উৎসব সবার” আর এই আপ্ত বাক্যকে মান্যতা দিয়ে সারা বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রত্নখচিত নিদর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তেমনি এক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নির্দেশনা রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের মনেহলি গ্রামে। এই গ্রামের শতাব্দীপ্রাচীন কালীপুজোয় দেখতে পাওয়া যায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি অনন্য নজির। এই গ্রামে রয়েছে শ্যামা ও নিদয়া কালি কালী। পাশেই রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের পীর বাবার মাজার। আর দুই ধর্মের এই দুই ধর্মস্থান নিয়ে গড়ে উঠেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন।
জানা গেছে কালীপুজোর দিন যখন এই গ্রামের নিদয়া মা কালীর চক্ষু দানের উদ্দেশ্যে পাঠা বলি হয় ঠিক সেই সময় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের পীর বাবার মাজারে সিন্নি চড়ান। পাশাপাশি চলে কোরআন পাঠ। আর এই কুরআন পাঠ শেষ হতেই শুরু হয় নিদয়া মায়ের মূল পুজো । এরপরে গ্রামের মানুষ পুজো শেষে শ্যামা মা ও নিদয়া মায়ের মূর্তি বাইরে বের করে আনেন খোলা ময়দানে। আর এই মূর্তি ঘিরেই পরের দিন বসে বিরাট মেলা। যেখানে ও হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ অংশগ্রহণ করে। কিন্তু করোনা সংকটের জেরে গত বছর সেই প্রথায় কিছুটা ছেদ পড়েছে ।
গ্রামবাসীদের কাছে জানা গেছে গতবছর করোনা সংকটের জেরে পুজোর আরম্ভর অনেকটাই ছোট করে এনেছিলেন মায়ের পুজো ও মাজারে সিন্নি চড়ানো হলেও প্রশাসনিক নির্দেশে বসেনি কোন মেলা। এই বছর গ্রামবাসীরা পরিস্থিতি বিচার করে আরম্ভর বৃদ্ধি করবেন। মেলা হবে কি না সেটা সেই সময়কার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে হয়ে আসা এই পুজো ঘিরে হিন্দু-মুসলিমের যে অনন্য সাম্প্রদায়িক নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায় তা সারা বাংলার কাছে একটি শিক্ষনীয় বিষয় বটে।