না বলে চলে গেলে তুমি! স্তব্ধ কল-কাকলি।
শীতের বাতাস বিষাদ ভারি–
কেঁদে যায় শাঁওলি! শাঁওলি!
তমাল সাহা
এক)
অভিনেত্র
কিংবদন্তি নাট্য ব্যক্তিত্ব তুমি
কে অস্বীকার করতে পারে
পৃথিবীর অঙ্গনে এই চরাচরে?
নাটকীয় বিভিন্ন চরিত্র রূপায়ণ অভিনয় মঞ্চায়ন–
প্রকাশ্য প্রদর্শনে
তোমার বেশিরভাগ নাটকই ছিল আমার দর্শনে।
আজীবন প্রকাশ্যে তুমি, মৃত্যুতে চলে গেলে নীরবে গোপনে
লুকিয়ে ছিল কি কোন বিষাদ হৃদয়ের কোণে!
সিঙ্গুর- নন্দীগ্রাম!
এই উপত্যকা এখন কেমন দৃশ্যমান—
না জানিয়ে চলে গেলে তুমি
রেখে গেলে কি কোনো না-বলা বাণী!
নাথবতী অনাথবৎ!
চলমান নাটকে কে দেখাবে এখন
আমাদের আলোকিত পথ?
দুই)
ড্রপ সিন
যজ্ঞাগ্নিসম্ভূতা যাজ্ঞসেনী তুমি–
নাথবতী! বর্ণন করো তোমার
সংক্ষুব্ধ সংলাপ বিষাদগাথা–
কথা অমৃত সমান।
নীরবে কেন চলে যাও অগ্নিবলয়ের ভেতর?
যুক্তি তক্কো আর গপ্পো থেকে উৎসারিত ঋত্বিকের বঙ্গবালা তোমার অমল মুখ কোথায় খুঁজি আর!
তুমি কেন এভাবে ড্রপসিন নামাও?
মঞ্চ থেকে পর্দার আড়ালে চলে যাও
শীতের প্রহরে এই বৈকালিক হাওয়ায়!
ডাকঘরের অমলের বিমূর্ত চেতনা–
জীবন-মৃত্যুর খেলার যে মঞ্চায়ন
গ্যালিলিওর জীবনের অভিজ্ঞতায়
স্নাত হয়ে একটি রাজনৈতিক হত্যাকে
প্রদর্শিত করো তুমি।
নাটকীয় চরিত্রের বৈচিত্র্য, অভিনয়ের বিভঙ্গ—
প্রেক্ষাগৃহের সংকীর্ণ পরিসর পরিত্যাজ্য!
রাষ্ট্রীয় অপশাসনের বিরুদ্ধে যখন তুমি প্রকাশ্যে বিদ্রোহিনী বিশাল মঞ্চে
তখন কেন কেন
তোমার এই মৃত্যুকালীন অজ্ঞাতবাস!
রাজত্ব! রাজত্ব! ক্ষমতা! ক্ষমতা!
রাজায়ন-ক্ষমতায়নের বিরুদ্ধচারণ–
চোখে ভাসে
জনাস্ত্রবাহী সক্রিয় কুরুক্ষেত্র ময়দান–
সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম অভিযান।
হে কৃষ্ণা!
রজঃস্বলা তুমি সভামধ্যে শ্লীলতাহানি!
ধৃতরাষ্ট্রীয় বুধজন বিদগ্ধ সভাসদ অস্ত্রবীরেরা নীরব নিঃশ্চুপ–
সে দৃশ্য আমার খুব মনে পড়ে
তোমার এই মহাপ্রস্থানকালে।
এখন দুঃশাসন
পুনর্বার ঊরু প্রদর্শনে প্রস্তুত, বস্ত্রহরণে ভয়ঙ্কর শক্তিমান।
হে দ্রৌপদী, পাঞ্চাল কন্যা!
নিক্ষেপ করো তোমার রক্তচক্ষু–অগ্নিবাণ।