অবতক খবর,২৭ জানুয়ারি: বীজপুরে একের পর ঘটনা ঘটেই চলেছে। এই বিধানসভা কেন্দ্রে যে মাফিয়াদের রাজত্ব কায়েম হয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে। কাঁচরাপাড়া হোক কিংবা হালিশহর,বীজপুর অঞ্চলে পুকুর ভরাট বন্ধ হবে না।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বারবার প্রেসমিটে বলছেন, পুকুর কিংবা জলাশয় ভরাট হলেই স্থানীয় থানার আইসি’র নামে অভিযোগ করুন,থানায় কেস করুন। কিন্তু এই এত কড়া পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও বীজপুরে তাঁর কথায় কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না, এমনকি ভয়ও পাচ্ছে না।
ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে জলাশয় অত্যন্ত জরুরী। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক সময় বলেছিলেন ‘জল ধরো জল ভরো’, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা দেখেছি বীজপুরে একের পর এক পুকুর ভরাট হয়েছে। এমনকি এখনও চলছে পুকুর ভরাট।
পুলিশ এখন শুধু চোর ধরতেই ব্যস্ত। আর রইল কথা সাধারণ মানুষের, তারা যে থানায় অভিযোগ করবেন এই মাফিয়াদের বিরুদ্ধে,সেই সাহস কোথায়? কারণ সকলেই শান্তিতে বসবাস করতে চায়, কোনো অশান্তি চায় না।
আপনাদের নজরে যদি এমন কোন পুকুর বা জলাশয় ভরাটের তথ্য থাকে তবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। অবতক তুলে ধরবে সেইসব ঘটনা, আওয়াজ তুলবে এই পুকুর মাফিয়াদের বিরুদ্ধে।
কাঁচরাপাড়া ২০ নং ওয়ার্ড, এর আগে ওই অঞ্চলে পুকুর ভরাট হয়ে দোকান গড়ে উঠেছিল। সেই খবর আমরা করেছিলাম। আজ আবার দেখা যাচ্ছে ২০ নং ওয়ার্ডের তৃণমূলের মূল পার্টি অফিসের ঠিক পেছনেই যে জলাশয় রয়েছে সেটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
এখন প্রশ্ন,যদি শাসকশ্রেণীর কর্মীরাই জলাশয় ভরাট করে,তাহলে মানুষ কোথায় যাবে? এলাকাবাসীর অভিযোগ, অত্যন্ত ধীরগতিতে পুকুর ভরাট করছে। অনেকের চোখেই পড়বে এটি, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সেই সংবাদ প্রকাশিত হবে, যার ফলে কিছুদিন বন্ধ থাকবে পুকুর ভরাট, কিন্তু সেই পুকুর আর পুনরুদ্ধার করা যাবে না।
কারণ কারোর কাছেই এই পুকুর খননের সময় নেই বা এত অপচয় করার মতো অর্থ নেই। পুকুর ভরাট যারা করছে তারা কখনোই অর্থ অপচয় করে খনন করবে না সেই পুকুর। নগর প্রশাসন, থানা প্রশাসন বিষয়টি দেখবে বলে এড়িয়ে যাবে এবং কিছুদিন পরেই আবার নির্দ্বিধায় মাফিয়ারা পুকুর ভরাট করে সেখানে বিল্ডিং গড়ে তুলবে। কারণ একটি পুকুর ভরাট হলে সেখানে সকলেরই পকেট ভরার সুযোগ থাকে, তা সে নগর প্রশাসন হোক কিংবা থানা প্রশাসন!
কিছু আমদানির জন্য একের পর এক পুকুর ভরাট হয়ে চলেছে গোটা বীজপুর জুড়ে। কিন্তু এতে যে মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তা কেউ বুঝতে পারছে না।
বিভিন্ন ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর যারা রয়েছেন, তাদের অধিকাংশের ধারণা যে, তারা তো আর টিকিট পাবেন না, এই সুযোগ পকেট ভরার, তাই যা হচ্ছে হোক তাদের কিছু যায় আসে না।
সামনে পৌর নির্বাচন। তাই অঞ্চলের বড় বড় মাতব্বর তথা নেতারাও সব দেখে শুনে চুপ করে আছেন।
তবে বিরোধীরা বলছেন, আর কেউ দেখুক বা না দেখুক সাধারণ মানুষ কিন্তু সব দেখছেন। প্রকাশ্যে যেভাবে পুকুর ভরাট হচ্ছে, যেভাবে দখলদারি চলছে তা সবকিছুই সাধারণ ভোটাররা কিন্তু দেখছে। সবকিছুর জবাব তারা দেবেন ওই ভোটের দিন। যেখানে কিছুদিন আগেই একটা পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছিল, তৎক্ষণাৎ হালিশহর পৌরসভার মুখ্য প্রশাসক রাজু সাহানী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এরপর জেসিবি দিয়ে সরকারি অর্থ ব্যয় করে পুকুর খনন করেছিলেন। তার দশ দিন প্রায় অতিক্রান্ত। কিন্তু জায়গাটি একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তদন্ত নাকি চলছিল, কিন্তু তদন্তের কোন রিপোর্ট আসেনি।
পৌরসভার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, পুকুর ভরাট করছিল সে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।
এইযে সাধারণ মানুষের টাকায় জেসিবি দিয়ে পুকুর খননের কাজ চলছে,সেই দায় কার? কেন জনসাধারণের অর্থ দিয়ে পুকুর পুনরুদ্ধার হবে? এই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
বিরোধীরা আরো বলছেন, একটি পুকুর ভরাট হলে প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতা সকলেরই পকেট ভরাট হয়,আর পুনরুদ্ধারের সময় ব্যয় হয় মানুষের টাকা।
অন্যদিকে এলাকাবাসীরা অবতক খবরের মাধ্যমে বিধায়ক সুবোধ অধিকারীকে এই পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।