অবতক খবর,২৭ ফেব্রুয়ারি: শেষ পর্যন্ত শাসক শ্রেণীর প্রতিনিধি তৃণমূল দল মা-মাটি-মানুষের দল কি মানুষের উপর আস্থা রাখতে পারল না। এত সাথী প্রকল্প,এত ভান্ডার প্রকল্প,এত দুয়ারে প্রকল্প নিয়ে বিশাল কর্মকাণ্ড নির্মাণ করলেও কি তারা শেষ পর্যন্ত মানুষের উপর বিশ্বাস রাখতে পারল না? কাঁচরাপাড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে তৃণমূল দল কর্মীর প্রাধান্যে যেভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে দাপট দেখালো,তাদের পদশব্দের বাহুল্যে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করল,তাতে কি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর তারা আস্থা হারিয়ে ফেলেছে? গণতান্ত্রিক পরিসরকে বড় করার জন্য তাদের যে দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা ব্যাহত হয়েছে বলে দেখা গেছে।
৪ নং ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী মিনা ভার্মা সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তৃণমূলের দাপটে তিনি তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে যথাযথভাবে যোগাযোগ রাখতে পারেননি। সকাল দশটার মধোই তিনি বাড়ি চলে এসেছেন, ঘরে বসে গিয়েছেন। তৃণমূল কর্মী এক নেতার নেতৃত্বে ৪ নং ওয়ার্ডে ব্যাপক কর্মী সমাবেশ ঘটিয়ে যেভাবে চলাফেরা করেছে তা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর একটি পদাঘাত বলে তিনি জানান। সিপিএম প্রার্থী মঞ্জু দাসও বলেছেন,নীরবে ছাপ্পা ভোট চলেছে। কিন্তু ভয়ে তারা প্রতিবাদ করতে পারেননি।
১১ নং ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী সুদূর কামারহাটি ও শিবদাসপুর অঞ্চল থেকে বহিরাগতদের এনে ছাপ্পা ভোট দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
৬ নং ওয়ার্ড একটি উল্লেখযোগ্য ওয়ার্ড। যেখানে দুবারের প্রাক্তন বিধায়ক,দুবারের কাউন্সিলর ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন সেই শুভ্রাংশু রায়ের বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী তাপস সিনহাকে নিগ্রহ করবার অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই অঞ্চলের তৃণমূল নেতৃত্বও ক্ষিপ্ত। তারা মনে করছেন, তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে যিনি দাঁড়িয়েছেন তিনি যে কাজ করেছেন তাতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এক্ষেত্রে পুলিশ যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করেনি বলে অভিযোগ। অন্যদিকে তৃণমূলকর্মীরা মনে করেন,দলীয় কর্মীর এই আচরণে ঐতিহ্যবাহী এই ওয়ার্ডের সম্মানহানি ঘটেছে।
১৫ নং ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী প্রাথমিক পর্বে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে বলে জানালেও পরবর্তীতে তিনি বলেছেন যে, নীরবে ছাপ্পা ভোট চলছে। তার প্রতিবাদ করতে তিনি ভয় পেয়েছেন।
বিজেপি প্রার্থী সজল কর্মকার জানিয়েছেন তাকে তার নির্বাচনী কেন্দ্র অঞ্চল থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ১৬ নং ওয়ার্ডে মান্ধারী হাইস্কুলে
মৃত ভোটারেরও ভোট পড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
৮ নং ওয়ার্ডে বিরোধীদলের প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বুথে শাসকদল প্রভাব বিস্তার করেছে।ভুতুড়ে ভোটাররা ভোট দিয়ে যাচ্ছে তারা প্রতিহত করতে পারছেন না।
১৩ নং ওয়ার্ডের বিরোধী প্রার্থী শাসক শ্রেণীর প্রার্থীর দাপটের কাছে রীতিমতো পরাজিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সেখানে বিরোধী দলের কোনো প্রভাবই চোখে পড়েনি।
অর্থাৎ অদ্ভুত প্রক্রিয়ায় ভোট চলেছে। বীজপুরের বিধায়ক জানিয়েছিলেন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দলকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত এবং বিরোধী দলের প্রার্থী যদি দুই একজন বা কয়েকজন না জেতেন তাহলে গণতান্ত্রিক পরিসর যথাযথ হয় না। শাসকশ্রেণীর ভুলভ্রান্তি তো বিরোধী পক্ষই ধরে থাকেন এবং তাদের সচেতন করেন। ফলে দেখা যাচ্ছে কাঁচরাপাড়ায় যে পরিবেশ গড়ে তোলার ওয়াদা করা হয়েছিল তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে তা নিশ্চিত ভাবে রক্ষিত হয়নি।