হায় যুদ্ধ! ভালোবাসা কি জীবনের খেয়া তরী? সে কতদূর যায়… কতদূর দিতে পারে পাড়ি!

পাড়ি
তমাল সাহা

হাতে শাঁখা নেই, পলা নেই
কপালে নেই রক্তিম সিঁদুর
সিঁথির সাদা রেখাটি স্পষ্ট
আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে—
এ কোন ছায়াপথ, কতদূর দিয়েছে পাড়ি!
পরনে তার
ধবধবে সাদা আনকোরা শাড়ি।

সাত বছরের মেয়েটি
এলোমেলো চুল
পরনে সাদা ফ্রক—
ঘাগড়াটিও শোকাহত স্হির,
নিচে ঝুলে থাকে
মেয়েটি নিথর মুখ—
সেঁটে দাঁড়িয়ে মাকে।

সামনে সামরিক উর্দি পরা
একটি আবক্ষ প্রতিকৃতি—
রজনীগন্ধা স্তূপীকৃত,
সুগন্ধি ধূপ
ধীরে ধীরে জ্বলে যায়।
রজনীগন্ধা ও ধূপের জন্ম কেন
তা এতদিন পরে বোঝা যায়!

নারীটি ডুকরে ভেঙে পড়ে কান্নায়—
মিথ্যে! মিথ্যে!
এতো মিথ্যে কথা বলতে পারো তুমি!
বিয়ের আগে এত বড় মিথ্যেকে সত‍্যি বলে ভেবেছিলেম আমি?
বলেছিলে, পৃথিবীতে আমাকে সবচেয়ে ভালোবাসো তুমি।
আমি একটুও বুঝিনি তখন
আমার চেয়েও
ভালোবাসার একজন আছে তোমার,
তা করেছো সম্পূর্ণ গোপন,
একদম বুঝতে দাও নি তুমি!

সে তোমার প্রিয় জন্মভূমি।

দুজনেরই মায়া কাটিয়ে আজ
কি করে চলে গেলে তুমি?

গাছ যদি ভেঙে পড়ে ঝড়ে
বলো, বাহুলতা তবে কাকে
আঁকড়ে ধরে?