অবতক খবর,সংবাদদাতা,১৬ জুলাই :: বিদ্যালয়ের জমি জবরদখল হয়ে গেছে। ফলে নতুন করে আর স্কুল ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হয় নি। স্কুল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে উঠেছিল, কিন্তু গ্রামের পড়ুয়াদের কথা ভেবে স্কুল বন্ধ হতে দেননি পেশায় দিন মজুর কার্তিক মণ্ডল। নিজের দু’‌কামরার বাড়ির একটি ঘর ছেড়ে দিয়েছেন মিড-‌ডে মিল-এর সামগ্রী, আনাজপাতি ও স্কুলের কাগজপত্র রাখার জন্য অন্য ঘরটিতে কার্তিকবাবু তাঁর পরিবার নিয়ে থাকেন আর স্কুল ,বাড়ির উঠোনে গাছের নীচে। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বসে আসছে। গাজোল ব্লকের পান্ডুয়া চক্রের অন্তর্গত আমতলা প্রাথমিক বিদ্যালয় এভাবেই চলছে কার্তিকবাবুর বাড়িতে।

২০১২ সালে আদিনা এবং আলমপুরের মাঝামাঝি জায়গায় বিদ্যালয়টি অনুমোদন পায়। তারপর ৩০ জন পড়ুয়া নিয়ে পড়াশোনার কাজ শুরু হয় ২০১৪ সাল থেকে। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা। এখন পড়ুয়ার সংখ্যা ৬২। খাতায়-কলমে স্কুল শুরু হলেও গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি স্কুলের পরিকাঠামো। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন গ্রামের এক দরিদ্র বাসিন্দা কার্তিক মণ্ডল। কার্তিকবাবু জানান, ‘‌গ্রামের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমি নিজের বাড়িতে স্কুল করার জন্য ছেড়ে দিয়েছে, তা না হলে ওদের পড়াশোনা মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যেত।

আমি নিজে তেমনভাবে পড়াশোনা না জানলেও আমার ছেলেমেয়েদেরও শিক্ষিত করতে চাই। আমার ছেলেমেয়েদের সঙ্গে গ্রামের খুদেরাও শিক্ষিত হয়ে উঠুক। যতদিন না স্কুল ভবন তৈরি হচ্ছে, আমার বাড়িতেই স্কুল চলতে থাকবে।’‌ তাঁর আবেদন, ‘‌শিশুদের কলরবের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছি। এখন স্কুল  ছুটি থাকলেই মন খারাপ করে ওদের জন্য। আমি চাই সরকারিভাবে স্কুল ভবন তৈরি হলে যেন আমার বাড়ির কাছে কোনও খাস জমিতে হয়। তাহলে রোজ ওদের দেখতে পাবো।’‌

স্কুলের ভবন নির্মাণের জন্য বেশ কিছু টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। একটি জমিও চিহ্নিত করা হয় তখন, কিন্তু সেই জমি জবরদখল হয়ে যাওয়াতে ভবন তৈরির কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।