অবতক খবর,৫ আগস্ট,নদীয়া :-ডাক্তারবাবুর রেজিস্ট্রেশন নাম্বার জানতে চাওয়ার অপরাধে ভৎসনা! যে ঔষধের দোকানে তিনি বসেন একাধিকবার বলা সত্বেও, নিজের যোগ্যতার প্রমাণপত্র দেননি, রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে প্রেসক্রিপশন এর ওপরে দেওয়া দুটি মোবাইলের সুইচ অফ। ওষুধ না খেয়ে সুস্থ রোগী।
শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সামনে, সারিবদ্ধ ওষুধের দোকানে লম্বা লম্বা বোর্ডে বিভিন্ন শারিরিক বিষয়ে নানান যোগ্যতাসহ রয়েছে বহু খতনামা ডাক্তারের সাইনবোর্ড। এরকমই এক দোকান বণিক ফার্মেসীতে এমবিবিএস (কোল), এমডি মেডিসিন কোল), সুগার প্রেসার থাইরয়েড পেট ও হার্ট রোগ বিশেষজ্ঞ ড: স্বপন কুমার সাহার কাছে নদীয়ার শান্তিপুর বাবলা গোবিন্দপুর সুকান্ত পল্লীর বাসিন্দা শুক্লা সমদ্দারের গা গোলানো এবং বুক ধরফর অসুস্থতা নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসেন।
তার অভিযোগ ৪০০ টাকা করে ভিজিট দিয়ে তিনি তিনবার ডাক্তার দেখান এক সপ্তাহের মধ্যে। সুস্থ হয়ে ওঠা তো দূরে থাক উপরন্ত গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি, বুকের দুধ খাওয়া, তার শিশুও অসুস্থ হয়ে পড়েন।এই কদিনের মধ্যে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধপত্র মিলিয়ে প্রায় দশ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছেন।
গত দোসরা আগস্ট রাত্রিবেলায় তার শারীরিক পরিস্থিতি অবনতি ঘটায়, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার ড: জয়ন্ত বিশ্বাসের শরণাপন্ন হন। তার পরামর্শ মতন, সমস্ত ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন একদিনের জন্য, এরপর বিলকুল সুস্থ হন তিনি। সে কথাই ডাক্তারবাবুকে, জানাতে এসে তীব্র ভৎসনার মুখে পড়েন তিনি। তার অপরাধ ছিলো ডাক্তারবাবুর রেজিস্ট্রেশন নাম্বার জানতে চাওয়া।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ অতশতো বোঝেন না, ডাক্তারই ভগবান, কিন্তু বর্তমান ডাক্তারবাবুর কাছ থেকে জানতে পারলাম এত দামী এবং বেশি পরিমাণে ওষুধ দেওয়ার কোনো মানেই হয়নি, বরং ভুল ট্রিটমেন্ট হয়েছিলো, যার ফলে আমার প্রাণহানি পর্যন্ত হতে পারতো।
অসুস্থ স্ত্রীর স্বামী বিশ্বজিত সমাদ্দার বলেন, সন্দেহ প্রথম থেকেই হতো উনার কাছে আমরা বাদে এখনো পর্যন্ত কোনো রোগীকে দেখতে পেতাম না, এমনকি ওষুধ ওই দোকান থেকেই নেওয়ার কথা বলতেন।
এ বিষয়ে সুস্থ করে তোলা ডাক্তার জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, ডাক্তারের প্রশাসনিক দায়িত্বে থেকে আমি বলতে পারিনা, তার যোগ্যতা প্রসঙ্গে, তবে যেকোনো রোগীর কাছে আমাদের লাইসেন্স নাম্বার দিতে বাধ্য। পেশেন্টের ইসিজি ইকো কার্ডিও সবকিছুই নরমাল ছিলো, যে ধরনের ওষুধ উনি দিয়েছিলেন তা বন্ধ করতেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে। ডাক্তারদের সংগঠন আইএম এ র পক্ষ থেকে গত বছর ধরপাকড়ের ফলে অনেক ডাক্তার বাবুই বেপাত্তা হয়েছিলেন, গতবছর। আমরা তার পুনরাবৃত্তি চাই না। তবে রোগীর জীবন নিয়ে ছেলে খেলা, এই পেষা কে কালিমা লিপ্ত করে।
বি সি ডি এ নদীয়া জেলা অর্গানাইজার সেক্রেটারি অমিতাভ বিশ্বাস বলেন, অন্যান্য ডাক্তার মারফত জানতে পেরেছি, তিনি আদৌ রুবি হাসপাতালে কর্মরত নন, তবে ডাক্তারের যোগ্যতা সম্পর্কে আমরা যাচাই করার কেউ নয় এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দপ্তর তদন্ত করুক।ঔষধ দোকানের মালিক মানিক বণিক জানান, ডাক্তার বাবুকে তার যোগ্যতা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দেওয়ার কথা বলেছি একাধিকবার, তিনি কর্ণপাত করতেন না, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শেষ তিন দিন আগে একবার কথা হয়েছিলো, সাফ জানিয়ে দিয়েছিলাম বৈধ কাগজপত্র না পাঠালে আমার দোকানে তার বসার কোনো প্রয়োজন নেই।
তারপর থেকে দুটি মোবাইল সুইচড অফ একাধিকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাইনি। তবে রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর জেলা প্রশাসন স্থানীয় থানা এবং নদীয়া জেলা পরিষদের অধীনস্থ স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলেই জানিয়েছেন।