এবার আর লক্ষ্মী পুজো হবে না ঘরে ঘরে/ লক্ষ্মীর ধনে ভাণ্ডার যাবে ভরে।
লক্ষ্মীর পাঁচালি
তমাল সাহা
ও লক্ষ্মী! আছো নাকি ঘরে।
সরকার তো এসেছে তোমার দুয়ারে!
লক্ষ্মী ডাক শুনে আঁচলে ঘাম মুছে
দ্রুত দৌড়ে আসে।
আরে নেতু-দা, বসো, বসো।
উফ্ কী গরম,কী গরম বাতাসে!
বলো, কি করতে হবে?
আরে ফরম ফিলাপ করতে হবে
যেতে হবে ক্যাম্পে-শিবিরে।
পাঁচশো টাকা জমা পড়বে প্রতিমাসে লক্ষ্মীর ভাঁড়ারে।
কি বলছো নেতু-দা, সব মেয়েরাই পাবে?
হ্যাঁ রে হ্যাঁ! বাংলা জুড়ে
মেয়েদের ভয়ঙ্কর উন্নয়ন হবে।
সরকার বলছে, নিজেই চলছে ধারে।
এতো টাকা দেবে কি করে?
সে তো সরকারেরই চিন্তা!
তোর এতো চাপ নেবার দরকার কি রে?
আচ্ছা নেতু-দা, তুমি কি জানো এমএলএ-মন্ত্রীরা পায় কত?
চুপ থাকবি তুই? আমি জানিনা অতশত।
নেতু-দা, পাচ্ছি যদি লক্ষ্মীর ঝাঁপি,
মানে লক্ষ্মীর ধন
তাহলে তো এবার প্রতি বেস্পতিবার, আর কোজাগরীতে লক্ষ্মীপুজোর নেই প্রয়োজন?
মেয়েরা পণ্য—
নিজেরাই বিক্রি হচ্ছে, না সরকার কিনছে
এ কোন ধরনের সওদা!
এতে দেশেরই বা কি ফয়দা?
শোনো,কিছু মনে কোরো না যেন
এ তো ভিক্ষা খয়রাতি দান সরকারি ডোল।
কাগজে কাগজে প্রচার, ধান্দাবাজি
ভোট পাওয়ার ঢোল!
কাম নেই, হাত পেতে নাও টাকা
এতে কি নারীদের ইজ্জত বাড়ে?
মাত্র পাঁচশো টাকা!
এতো আরো ইজ্জত কাড়ে!
কি বলিস লক্ষ্মী তুই? এটাই অনুপ্রেরণা, এটাই প্রকৃত উন্নয়ন।
এভাবেই ভোটের বাজার চলে সারাক্ষণ।
নেতু-দা তার চেয়ে শিক্ষাটা বাড়িয়ে কারখানা খুলে দিলেই হয়!
মেয়েরা চাকরি পাবে, নিজেরাই সংসার চালাবে, এতো তালিবানের দেশ নয়!
লক্ষ্মীদেবী ধনবতী দেবী
লক্ষ্মীরা আজীবন পেতে যাবে হাত!
কবে তবে লক্ষ্মীরা
ঠিক করবে নিজের বরাত?
উন্নয়ন! উন্নয়ন! উন্নয়ন!
কর্মহীন করে রাখার বিশাল আয়োজন।