অবতক খবর,১১ অক্টোবরঃ পশ্চিমবঙ্গের কোথায় কি হলো এবং রাজনীতির কি পট পরিবর্তন হল তা খুব কম শোনা গেলেও ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বীজপুর বিধানসভায় কি হলো তা জানতে আগ্রহী থাকেন মানুষ। এক কথায় বীজপুর বিধানসভাকে পাখির চোখ করে রাখেন সাধারণ মানুষ। তবে এখন বলতে গেলে বাহুবলি নেতারা কেউই বিজেপিতে নেই। সকলেই চলে এসেছেন তৃণমূলে। ২০১৯ সালে সকলেই পাঁচিল টপকে বিজেপিতে চলে গিয়েছিল। বিজেপি থেকে আবার এলো তৃণমূলে। আপাতত সকলে তৃণমূলেই আছেন। আর তৃণমূলে ঢুকেই সকলে এখন মাতব্বর হয়ে গেছে। সকলেই এখন বড় বড় নেতা। তবে পুলিশ প্রশাসন হোক কিংবা সাধারণ মানুষ,তারা এখন হতচকিত।
কারণ এখন সকলেই বীজপুরে চলে আসছে। কখনো আসছেন সাংসদ, আবার কখনো আসছেন মন্ত্রীরা। শুধু তাই নয়, অন্যান্য জেলা নেতারাও বীজপুরে চলে আসছেন। বীজপুরে এখন প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও বিজয়া সম্মিলনী হচ্ছে। মূলত পুরনো যারা তৃণমূল কর্মী রয়েছেন অর্থাৎ যারা এবার টিকিট পাননি, তারাই বেশিরভাগ বিজয়া সম্মিলনী করছেন। একসাথে বসে খাওয়া দাওয়া তথা রাজনৈতিক আলোচনা করছেন। অন্যদিকে মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে বিজয়া সম্মিলনী করছেন জেলা নেতা থেকে শুরু করে মন্ত্রীরা।
অন্যদিকে বীজপুর বিধায়ক সুবোধ অধিকারীকে বিগত বেশ কিছুদিন ধরে বীজপুরেই দেখা যাচ্ছে না। অর্থাৎ শেষ তাঁকে দেখা গিয়েছিল বিজয়া দশমীতে। তবে খবর,তিনি শহরের বাইরে রয়েছেন। তিনি ফিরলে নাকি পাড়ায় পাড়ায় বিজয়া সম্মিলনী হবে।
তবে মূল বিষয় যেটি, সেটি হল এখন গোটা বীজপুর জুড়ে মোট তিনটি গোষ্ঠীকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে। অর্জুন গোষ্ঠী, শুভ্রাংশু গোষ্ঠী এবং সুবোধ গোষ্ঠী। অর্জুনের গোষ্ঠীতে তারাই ভিড়েছেন যারা এবার কিছু পাননি।
সেই সকল পুরনো নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন যে, ‘স্থানীয় নেতারাই আমাদের কোন জায়গা দেয়নি। আমরা দলের দোষ দেবো না।’
তবে তারা এখন অর্জুন সিং-এর দিকে রয়েছেন। কিছু কিছু কাউন্সিলর যারা অত্যন্ত চালাকির সঙ্গে রাজনীতি করছেন,তারা তিন দিকেই এক হাত এবং দুটি পা বাড়িয়ে রেখেছেন। কখনো তারা বলছেন যে, তারা অর্জুনের সঙ্গে রয়েছেন, আবার কখনো প্রকাশ্যে তাদের দেখা যাচ্ছে শুভ্রাংশু রায়ের বাড়িতে। আবার তাদেরকে সুবোধ অধিকারীর সাথেও দেখা যাচ্ছে। তবে আপাতভাবে যেটি বোঝা যাচ্ছে সেটি হল, একটি পা তারা বাড়িয়ে রেখেছেন শুভ্রাংশু রায়ের দিকে,আর একটি পা অর্জুনের দিকে এবং একটি হাত বাড়িয়ে রেখেছেন সুবোধ অধিকারীর দিকে।
এই তিনটি গোষ্ঠী নিয়ে বীজপুরের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ এখন জেরবার। কারণ বিষয়টি তাদের ভাবাচ্ছে যে আগামীতে কোন গোষ্ঠীর জোর বাড়বে?
বীজপুরের প্রত্যেককে একটি বিষয় ভাবাচ্ছে যে, হঠাৎ এমন কি হলো যে তিনটি গোষ্ঠী আদা জল খেয়ে মাঠে নেমে পড়ল!
তবে বীজপুরে রাজনীতিতে কিরকম পট পরিবর্তন হবে তা বোঝা মুশকিল। এদিকে হাওয়া বদলের আভাস দিচ্ছে বিজেপি এবং সিপিএম।
বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী হোক কিংবা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, তারা কিন্তু প্রকাশ্যেই বলছেন যে, ‘আমাদের সঙ্গে অনেক বিধায়ক এবং নেতারা যোগাযোগ রাখছেন।’
আর এই বিষয়টি নিয়েই বীজপুরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, আগামী দিনে কে কোন দিকে যাবে?
তবে দেখা যাক বীজপুরের রাজনীতি আগামীদিনে কোন দিকে যায়।
ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বরিষ্ঠ কাউন্সিলর এবং তৃণমূল নেতারা আলোররানি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে দিয়েছেন।
যেহেতু তাঁর বাড়িতে অর্জুন সিং এসেছেন,আর সুজিত দাস তিনিও নাকি পদ পেতে চলেছেন, এমনই রটে গেছে বীজপুরের রাজনৈতিক মহলে।
তবে এই নিয়েই জল্পনা শুরু হয়েছে বীজপুরের রাজনৈতিক মহলে। কারণ তিনটি গোষ্ঠী রাজনীতির ময়দানে রয়েছে।
তবে দেখা যাক বীজপুরের রাজনীতি আগামীতে কোন দিকে যায়। সমস্ত ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরব আমরাই, নজর রাখুন অবতক খবরে।