অবতক খবর,১০ সেপ্টেম্বর,নদীয়া: নদীয়ার হাঁসখালীর বাঁশিওয়ালা নামে খ্যাত বংশীধারী নারদ বিশ্বাস। নদীয়া জেলার চিত্রশালি এলাকার হাজারী নগরে বসবাস করেন দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে।গরীব অসহায় পরিবারের একমাত্র সন্তান নারদ বাবু।ছোট বেলায় বাবা মারা যাওয়ায় মাকে নিয়ে চিন্তায় তিনি। সংসার চালাতে বাবার পথ অনুসরণ করেন।

কারণ নারদ বাবুর বাবাও ভালো বাঁশি বাজাতেন,তৈরি, করতেন বিক্রিও করতেন।

বাবার কাছে অনেকেই আসতেন বাঁশি বাজানো শিখতে।আর প্রতিদিন নানা ধরনের বাঁশি বানিয়ে অর্থ উপার্জন করতেন।বাবার মৃত্যুর পর নারদ বাবু সেই পথ অনুসরণ করেন। আর এই বাঁশির জন্য যে বাশ লাগে তা পশ্চিমবঙ্গে হয় না। ত্রিপুরার পাহার থেকে আনেন। অল্প দিনের মধ্যেই নারদ বাবুর বাঁশির সুরে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই বাঁশি বাজানো শিখতে শুরু করে। নারদ বাবুর বাঁশির সুখ্যাতি জেলা থেকে রাজ্য এমনকি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

নিজের বলতে পিডব্লিউডি রাস্তার ধারে শিল্পী নারদ বিশ্বাসের বসবাস। বাড়িটি ভাঙাচোরা টালির বাড়ি।
তিনি ত্রিপুরা থেকে বাঁশ এনে বাঁশি তৈরি করে বিক্রয় করেন কলকাতায়।কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের ফলে কলকাতায় যেতে পারছেন না বাঁশি বিক্রয় করতে।সেজন্য তাঁর বাড়িতে প্রচুর বাঁশি জমে গেছে।
এদিকে বৃদ্ধা মায়ের আশির উর্দ্ধে বয়স। তাঁকে নিয়ে খুবই চিন্তিত নারদ বাবু। বয়সের ভারে তিনিও ক্লান্ত। সরকারি ভাবে ১০০০ টাকা করে ভাতা পান তিনি। অভাবের সংসার,পেটতো মানেনা।তাই শরীর সায় না দিলেও এখন বাঁশি নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।কিন্তু ক্রেতার অভাবে বাঁশী বিক্রি হচ্ছে না।ফলে অসহায়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বাঁশিওয়ালা নারদ বিশ্বাস।

তারই অসহায়তার সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ বাড়ি থেকে তুলে দেবার জন্য ভয়ও দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ নারদ বাবুর। তাঁকে ওখান থেকে তুলে দেওয়া হতে পারে এই ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বৃদ্ধ বাঁশিওয়ালা।এত কিছু সত্ত্বেও নারদ বাবু প্রশাসনকে জানাতে ভয় পাচ্ছেন তার অভিযোগ।কারণ যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবেন তারা যে ধনী।সেই আতঙ্কই কুরে কুরে খাচ্ছে নারদ বাবুকে।