অবতক খবর, নদীয়া: এ পর্যন্ত একদিনে সর্বাধিক আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ জনের পজিটিভ রিপোর্ট এলো আজ। অর্থাৎ জেলায় মোট আক্রান্ত সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ১০৯৪ জন। পূর্বেই এই অনুমান করেই হয়তো জেলা প্রশাসন চোখ রাঙানিতে আবারো সাতদিনের জন্য বন্ধ হতে চলেছে দোকান বাজার কর্মক্ষেত্র সবকিছু। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,এই ৭ দিনের খাবার ও অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিস সঞ্চয় করে রাখতে যাতে খুব বেশি বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন না হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ! সঞ্চয় করতে গেলে অর্থের প্রয়োজন ! সেটা আসবে কি উপায়ে?
লকডাউনের জেরে কাজ নেই দীর্ঘ চার মাস! হকার, তাঁতি, বিভিন্ন দোকানের কর্মচারী, বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক, ছোটখাটো ব্যবসায়ী পরিবার বাঁচানোর তাগিদে হয় পুঁজি খেয়ে ফেলেছেন না হয় ঋণের বোঝা মাথায় চাপিয়েছেন। কমবেশি ,সরু মোটা, কেন্দ্র-রাজ্য যাইহোক চাল ডাল আটা না হয় পাওয়া গেল! কিন্তু বাকিটা? বিদ্যুৎ বিল মুকুবের রাজনৈতিক তরজা বহুবার দেখেছে টিভির পর্দায়, মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি চাপাটি মেইলের বন্যা বয়ে গেলেও সেগুলি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ভাতের হাড়ি পর্যন্ত পৌঁছায় নি । বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ করার কথা জানালেও রাজনৈতিক কর্মসূচির বন্ধের কথা কোথাও জানানো হয়নি এই বিজ্ঞপ্তিতে । তবুও জনদরদি নেতা নেত্রীর নির্দেশে সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ থাকার নির্দেশ থাকলেও, তা শুধু বোকা বাক্সে এবং স্মার্টফোনেই আবদ্ধ। অন্যদিকে প্রান্ত্রিকদের সহযোগিতার দান-খয়রাতে প্রতিযোগিতায় অসম লড়াইয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো।
অথচ এরই মাঝে একশ্রেণীর মানুষ প্রতিবাদের ভাষা ভুলে নিজের পরিবারকে দুধে ভাতে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর তারই প্রমাণ মিলছে বাজারে, দোকানে! সঞ্চয় আর শুধু সঞ্চয়! অক্সিমিটার পকেটে নিয়ে পারলে অক্সিজেনের সিলিন্ডারও সঞ্চয় করার প্রবণতা বিভিন্ন ভিটামিন ট্যাবলেট বিশেষত ভিটামিন ডি বাজারে নিঃশেষিত হয়েছে এদের কারণে, অথচ এই সমাজকে নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ করা , রোদে জলে ভিজে বাবুদের খাদ্যদ্রব্যসঞ্চয়ের সরবরাহকারী কৃষকের পরিস্থিতির কথা ভাবেন না কেউ! সরকারি ভাষায় সঞ্চয়ের নির্দেশ, তাই নিয়ে শুরু হবে কালোবাজারি! আবার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে দেখা যাবে সেই জনদরদি দের, বিরোধীরা বসবে ধর্নায় , জমা করবে ডেপুটেশন, সাংবাদিক তুলে ধরবে ঘটনা, অবশেষে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বাধ্যতামূলক মেটানো হবে সমস্যা।
জেলার কৃষ্ণনগর রানাঘাট ,শান্তিপুর , চাকদহ, করিমপুর চাপরা তেহট্টো নাকাশিপাড়া, নবদ্বীপ কল্যাণী গয়েশপুর, চাপড়া সহ প্রত্যেকটি বাজারে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেল। জিনিসপত্রর পরিমাণ তলানিতে ঠেকেছে প্রায়। ডাবল ডোর ফ্রিজ পুরোটাই ভর্তি! কিন্তু দিন আনা দিন খাওয়া দের ব্যাগে সেই রেশনের চাল ডাল বাদে জোটেনি কিছুই। হাতে মাত্র আর একটা দিন।
পিপীলিকা পিপীলিকা !কোথায় যাও একা একা ?দাঁড়াও না, একবার ভাই ! শীতের সঞ্চয় চাই! খাদ্য খুঁজিতেছি তাই! দাঁড়াবার সময় তো নাই।
পেটে গামছা বেঁধে এ সাত দিন চালিয়ে , 15 ই আগস্ট পতাকা তলে দাঁড়িয়ে বিদ্বজনেরা বোঝাবেন স্বাধীনতার মানে।