অবতক খবর,তারাপীঠ,১৩ সেপ্টেম্বর: বৃহস্পতিবার কৌশিকী অমাবস্যা । মন্দির কমিটির আশা এই বিশেষ দিনে এবছর প্রায় আট থেকে দশ লক্ষের মতো পুণ্যার্থী তারাপীঠ মন্দিরে আসবেন । সেই উপলক্ষে সেজে উঠছে তারাপীঠ । বলা হয়, সাধনা করে সাধক বামদেব কৌশীকি অমাবস্যার রাতে মা তারার দর্শন পেয়েছিলেন । সেই উপলক্ষে প্রতিবছর এই দিনটিতে কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় হয় তারাপীঠে । তারই প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে ।
এদিন ভোর 4টে 31 মিনিটে কৌশিকী অমাবস্যার তিথি শুরু । অমাবস্যার তিথি চলবে 15 সেপ্টেম্বর অর্থাৎ শুক্রবার সকাল 6টা 39 মিনিট পর্যন্ত । সিদ্ধপীঠ তারাপীঠ । তারাপীঠে মা তারার মন্দিরের পাশেই দ্বারকা নদীর পাড়ে রয়েছে তারাপীঠ মহাশ্মশান । তারাপীঠের এই মহাশ্মশানের পঞ্চমুন্ডির আসনে বসে সপ্তঋষি বশিষ্ট মুনি তপস্যা করে মা তারার দর্শন পেয়েছিলেন । কৌশিকী অমাবস্যার তিথিতেই এই শ্মশানের শ্বেতশিমুল বৃক্ষের নীচে সাধনা করে মা তারার দর্শন পেয়ে সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামদেব । সেই সময় থেকেই মহাসমারোহে কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হয়ে আসছে তারাপীঠে ।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই কৌশিকী অমাবস্যার তিথিতে তারাপীঠের মহাশ্মশানে তন্ত্র সাধনা করতে আসেন বহু তন্ত্রসাধক । মহাশ্মশানে জ্বলে ওঠে হাজারে হাজারে হোমকুণ্ড । মা তারার দর্শন পেতে এবং সাধনায় সিদ্ধিলাভ পাওয়ার আশায় তারাপীঠে এসে ভিড় জমান তন্ত্রসাধক থেকে সাধারণ পুণ্যার্থীরাও । তারাপীঠে আসা পুণ্যার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে মা তারার মন্দিরে পুজো দিতে পারেন তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করেছে বীরভূম জেলা পুলিশ ও তারাপীঠ মন্দির কমিটি । তারাপীঠ মন্দিরের প্রবেশ পথগুলিতে বসানো হচ্ছে মেটাল ডিটেক্টর গেট । তারাপীঠ মন্দির ও তারাপীঠ মন্দির এলাকা জুড়ে বসানো হচ্ছে সিসি টিভি ক্যামেরা । মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের জন্য তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী বাঁশের ব্যারিকেড ।
মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে 175 জন বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হবে । বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা এড়াতে রাজ্য পুলিশের আধিকারিক-সহ হাজার জন পুলিশ কর্মী এবং 1 হাজার 700 জন সিভিক ভল্যান্টিয়ার মোতায়েন করা হবে । থাকবে মহিলা ও সাদা পোশাকের পুলিশ । বুধবার দুপুর 2 টো থেকেই তারাপীঠে কোনও গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ 14 নম্বর জাতীয় সড়কে রামপুরহাটের মুনসুবা মোড়, চাকপাড়া মোড়, মল্লারপুরের আম্বা মোড়, বাহিনা মোড় তারাপীঠ থানার বেসিক মোড়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে সমস্ত গাড়ি । তবে সেখান থেকে তারাপীঠ মন্দির পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য রাখা থাকবে পর্যাপ্ত পরিমাণে টোটো, ইরিক্স ও মোটর চালিত ভ্যান ।
ইতিমধ্যেই তারাপীঠের হোটেল ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বীরভূম জেলা প্রশাসন । আবাসিকদের কাছ থেকে যাতে অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া না নেওয়া হয় তার জন্য হোটেল ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে । পাশাপাশি তারাপীঠে অলিতে গলিতে যাতে দমকল বাহিনীর গাড়ি যাতায়াত করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে । সেই মতো বুধবার দমকল বাহিনীর লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে তারাপীঠ মন্দিরের প্রধান রাস্তা গুলিতে অভিযান চালায় রামপুরহাট মহকুমা শাসক ও রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক । পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ ও জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগ থেকে পানীয় জলের পাউচ বিতরণ করা হবে ।