অবতক খবর , রাজীব মুখার্জী, হাওড়া :       এই বছরে বিশ্বকর্মা পূজা ও মহালয়া একই দিনে। মহালয়া মানে মায়ের আগমনের সূচনা এই ধরিত্রিতে। তার সাথে বিশ্বকর্মা পুজো। যে হাওড়া একদা ইংল্যান্ডের শেফিল্ড নামে খ্যাত ছিল বিশ্বে। আজ সেখানেই ম্লান শিল্পের অবস্থা। অতীতে এই জেলাতে অবস্থিত ছিল অসংখ্য নামি দামি কারখানা যার খ্যাতি ছিল বিশ্ব জোড়া।

বড়ো শিল্প ছাড়াও ছিল অসংখ্য ছোট কলকারখানা। তাই বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে প্রতিটি কারখানাতে থাকতো উৎসবের হওয়া। আজ তা অতীত একদিকে যেমন কারখানাগুলো অবলুপ্ত হয়েছে অন্যদিকে ক্রমাগত ছোট হতে শুরু হয়েছিল বিশ্বকর্মা পুজো। আর এই বছর কোভিড সংক্রমণ ও লকডাউনের আক্রমণে শিল্পের বেহাল দশা। কোথাও কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। কোথাও আবার ছাঁটাই হয়েছে শ্রমিকেরা। তাই সেই প্রভাব পড়েছে বিশ্বকর্মার মূর্তি বিক্রিতেও। প্রতি বছর এই ১৭ ই সেপ্টেম্বরেই বিশ্বকর্মা পুজো হয়। হাতে আর একটা দিন মাত্র। অন্যান্য বছরগুলিতে যেভাবে ব্যস্ত থাকত মৃৎশিল্পীরা এই বছর সেই ব্যস্ততা আর নেই। করোনাভাইরাস সবকিছু ওলট-পালট করে দিয়েছে। দীর্ঘদিন লকডাউন থাকার কারণে ছোট শিল্প থেকে বড় শিল্প সবই রুগ্ন অবস্থায় চলছে। মূলত লৌহ শিল্প ও কলকারখানায় বিশ্বকর্মা পূজা করে থাকেন। শ্রমিকরা সারা বছরের মধ্যে এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। বিভিন্ন কলকারখানার অবস্থা জীর্ণ থাকার কারণে প্রভাব পড়েছে বিশ্বকর্মা পূজার মৃৎশিল্পে। দূর থেকে শ্রমিকরা এসে ঠাকুর তৈরিতে ব্যস্ত থাকত। আগের মত সেই অর্ডার না থাকার জন্য হাতেগোনা বড় ঠাকুর থেকে ছোট ঠাকুর করছেন। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে কাঁচামালের।

তবু অন্যান্য বছরগুলিতে কিছু লাভের মুখ দেখতে পেলেও এই বছর মনে করছেন সেই লাভ টুকু আর পাবে না। মৃৎশিল্পী ঘরে এই মুহূর্তে চিন্তার ভাঁজ। তাই এ বছরে বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছে তারা এই করোনা আবহে। মূর্তি তৈরির সরঞ্জাম এ দাম প্রায় দ্বিগুন হয়ে গেছে। হাওড়া শিল্পাঞ্চলে আগে থেকেই প্রায় ছোট থেকে বড় কলকারখানা বন্ধ যেগুলি চলছিল সেটাও করোনা আবহে লকডাউন এর ফলে একেবারে বন্ধের মুখে। সেই কারণে বিশ্বকর্মা পুজোয় ভাটা পড়েছে হাওড়ায়। মৃৎশিল্পীরা জানান বিশ্বকর্মা প্রতিমা অর্ডার এর আশায় এবারে বানিয়েছি আশা করছে বিক্রি হয়ে যাবে না হলে দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে বড়ো ক্ষতির মুখে পড়বে মৃৎ শিল্পীমহল।
তবু অন্যান্য বছরগুলিতে কিছু লাভের মুখ দেখতে পেলেও এই বছর তাদের আশঙ্কা সেই লাভটুকুও বোধ হয় আর পাবে না।