অবতক খবর,৮ আগস্ট,মলয় দে নদীয়া:- বিশ্বের মাঝে বাংলার ঐতিহ্য কৃষ্টি কালচার তুলে ধরার অন্যতম স্থান কলকাতার নন্দন। শুধু কলকাতা নয়, এই চিন্তা ভাবনা জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সচেষ্ট ছিলেন প্রাক্তন সংস্কৃত প্রবন মুখ্যমন্ত্রী সদ্য প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য । নদীয়া নিয়েও ছিল যথেষ্ট ভাবনা চিন্তা তাইতো রানাঘাটে রবীন্দ্র সার্ধশতবর্ষ মঞ্চ।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্যই নদিয়া পেয়েছিল তাদের নন্দনকে। কলকাতা রবীন্দ্র সদন সাংস্কৃতিক মঞ্চের মতোই আজ রানাঘাটেও বুদ্ধদেব বাবুর জন্যই মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে গীতাঞ্জলি সিনেমা হলে নতুন সংস্করণ তথা রবীন্দ্র সার্ধশতবর্ষ মঞ্চ।

বৃহস্পতিবার সকালে প্রয়াত হলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল তার ৮০ বছর। ২০০০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১১ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন তিনি। এদিন সকালে পাম অ্যাভিনিউর বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রায়ণের খবর পেয়ে শোকাহত রাজনৈতিক মহলসহ গোটা রাজ্যবাসী।

নদীয়া এবং সেই সাথে রানাঘাটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম। এর কারণ হিসেবে জানা যায় রানাঘাটে এক সময় ছিল গীতাঞ্জলি সিনেমা হল। বিভিন্ন চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক ক্রিয়া-কলাপের মানুষজনেরা রানাঘাটবাসীকে চেয়েছিলেন কলকাতার নন্দনের মত একটি সাংস্কৃতিক শিল্পের আখড়ার উপহার দিতে। যেখানে বিভিন্ন শিল্পীরা এসে নিদর্শন দেখাতে পারবে তাদের শিল্পকলার। আর সেই মতই তৎকালীন জেলা পরিষদের সভাধিপতি রমা বিশ্বাস এবং প্রাক্তন সাংসদ অলকেশ দাসের উদ্যোগে রানাঘাটের গীতাঞ্জলি সিনেমা হলটি অধিগ্রহণ করে জেলা পরিষদ। পরবর্তীকালে তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর সেটিকে অধিগ্রহণ করেই রবীন্দ্র সার্ধশতবর্ষ মঞ্চ হিসেবে রানাঘাটের গীতাঞ্জলি সিনেমা হলকে মানুষের কাছে তুলে দেন তৎকালীন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে। তারপর থেকে আজও রবীন্দ্র সার্ধশতবর্ষ মঞ্চ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপ চলতে থাকে।

উল্লেখ্য, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য স্বনামধন্য রাজনীতিবিদ ছাড়াও ছিলেন একাধারে সংস্কৃতিক শিল্পের পরিপূরকও। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের সঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন প্রায় প্রতিনিয়তই তিনি নন্দন চত্বরে যেতেন বলে জানা যায়। উপমুখ্যমন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকার সময় বিভিন্ন জেলার শিল্প সংস্কৃতি নিয়ে তিনি বাড়তি গুরুত্ব দিতেন বলেই জানা যায়। তবে রানাঘাট তথা নদীয়া বাসী আজও কৃতজ্ঞ এই প্রয়াসের জন্য। সে কথাই আজ তার প্রয়াণ উপলক্ষে বিভিন্ন শোক সভা শোক মিছিলে উঠে আসে।