কাঁচরাপাড়ায় রমরমা মধুচক্রঃগ্ৰেপ্তার ৫
অবতক খবর,১৭ ডিসেম্বর: কাঁচরাপাড়া মহাজাতি ক্লাব সংলগ্ন অঞ্চলের একটি বাড়িতে বহু বছর ধরেই চলছিল মধুচক্র। পাড়াপড়শিরা সবাই সবকিছুই জানতেন। কিন্তু কখনোই কারোর কিছু বলার সাহস হয়নি। কিন্তু ইদানিং ওই বাড়িতে বহিরাগতদের আনাগোনা অত্যধিক বেড়ে যায়। ফলে নষ্ট হচ্ছিল সামাজিক পরিবেশ। যারফলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছিলেন স্থানীয় অধিবাসীরা।
অবশেষে আজ পাড়া প্রতিবেশীরা একজোট হয়ে হানা দেয় সেই বাড়িতে। হাতেনাতে ধরা পড়ে সকলে। কিন্তু তাদের মধ্যে দু’জন পুরুষ পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। খবর দেওয়া হয় বীজপুর থানায়। অবশেষে সেখানে পুলিশ এসে পাঁচজন মহিলাকে গ্ৰেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
কাঁচরাপাড়ার পরিবেশ এইভাবে নষ্ট হতে চলেছে। কাঁচরাপাড়ার অন্যান্য অঞ্চলেও সমাজকে কলুষিত করার এই কাজটি চলছে। সামাজিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই অতিমারিকালে লকডাউনের সময় মানুষের জীবন জীবিকা বিপর্যয়ের মুখে। এই পরিস্থিতি তুলে ধরছে যে এই অঞ্চলে নারীরা আর্থিকভাবে সুরক্ষিত নয়। ফলত তারা এই অসামাজিক পথে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
তবে প্রশ্ন,এই একটি কেন্দ্রীয় অঞ্চলে এই পেশা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল কিভাবে? এই পেশায় যুক্ত মহিলারা জানিয়েছেন, প্রশাসনিকভাবে মদত না থাকলে এ কাজ চলতে পারে না এবং তারা এও জানিয়েছেন, প্রশাসনিক নেতারাও এসে মাঝে মাঝে এখানে এসে ‘মধু’ খেয়ে যান। পেশায় জড়িত কয়েকজন মহিলা বলেন, মধুচক্র এই নামকরণটি করে বাংলার নারীদের মর্যাদা হানি করা হচ্ছে। আমরা শ্রম দিয়ে এই অর্থ উপার্জন করছি। আমরা আর্থিকভাবে সংকটের মুখে বলে এই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছি। সরকার,রাষ্ট্র যদি আমাদের দিকে তাকায়, আমাদের যদি অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে আমরা এই পথে যাব কেন? প্রশাসনিকভাবে মদত না থাকলে এই কাজ করা যায় না তারা এটি জানিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ এই চক্র যারা চালান তাদের সঙ্গে প্রশাসনিক সংযোগ রয়েছে এবং আর্থিক লেনদেন রয়েছে।
প্রশাসনিকভাবে যুক্ত যারা তারা নিশ্চিত চান এই ব্যবস্থা চলুক। তাদের অতিরিক্ত আয়ের পথটি সুগম থাকুক। এই জন্যই এই অঞ্চলে কেবলমাত্র দেহ ব্যবসা নয় সাট্টা,লোটো,চোলাইয়ের রমরমা কারবার চলছে। নির্দিষ্টভাবে প্রশাসন এর সঙ্গে জড়িত এবং রাজনৈতিক নেতাদের এই পেশা চালকদের সঙ্গে নিশ্চিত হিস্যা রয়েছে, নাহলে কোন একটি অঞ্চলে কোন একটি ওয়ার্ডে এই অবস্থা চলতে পারে না। যতদিন না পর্যন্ত মহিলাদের আর্থিক উপার্জনের ব্যবস্থা করা যাবে ততদিন এই ব্যবস্থা চলবেই।
অন্যদিকে প্রশাসনের যে ঘুণ ধরেছে, রাজনৈতিক নেতারা যে চরিত্রহীন তাদের দায়-দায়িত্ব যে কিছুই নেই,কোনো লৌকিক জীবনের পাশাপাশি এই ব্যবসা চলতে পারে না,এই বোধও তাদের চলে গিয়েছে।