অবতক খবর: ২৪ বছর আগে দিল্লি থেকে লাহোর পর্যন্ত‘সদা-এ-সরহদ’ বাস পরিষেবার মাধ্যমে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি। নওয়াজ শরিফ তখন পাক মসনদে। পারভেজ মুশারফ পাক সেনাপ্রধান। বাজপেয়ী যখন নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বন্ধুত্বের হাত মেলাতে ব্যস্ত, তখনই ‘এলওসি’ লাইন অফ কন্ট্রোল টপকে ভারতের কার্গিল, দ্রাস, বাতালিক সেক্টরের পাহাড়ের চুড়ো দখল করে নেয় পাকিস্তানের নর্দান ইনফ্রান্টি। অনেক রক্তক্ষয়ের পর ভারতীয় সেনাবাহিনী পুর্নদখল করে নিজেদের অবস্থান।
বুধবার লাদাখে ‘বিজয় দিবসে’র অনুষ্ঠানে নাম না করে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এদিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বলেন, দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করতে পিছপা হবে না ভারত। এই বিষয়ে সেনাকে প্রস্তুত থাকার বার্তা দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পাশাপাশি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের উদাহরণ টেনে দেশের হয়ে লড়ার ব্যাপারে সাধারণ নাগরিকদেরও প্রস্তুত থাকতে বললেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “নিয়ন্ত্রণরেখায় বরাবার বেআইনি অনুপ্রবেশ ঘটছে। চুপ করে বসে থাকবে না ভারত। দেশের সম্মান এবং মর্যাদা বজায় রাখায় দরকার হলে নিয়ন্ত্রণরেখা ডিঙিয়ে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে”।
এদিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “১৯৯৯ সালে পাকিস্তান পিছন থেকে ছুরি মেরেছিল। ভারতের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি কুর্ণিশ জানাই দেশের সেই বীর সন্তান জওয়ানদের যাঁরা দেশের বলিদান দিয়েছিলেন।” পাশাপাশি রাজনাথ বলেন, দেশে যখনই যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তখন সাধারণ নাগরিকরা সেনাকে সমর্থন করেছে। আমি তাদের বলব, “প্রয়োজনে যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি সৈন্যদের সাহায্যের জন্য প্রস্তুত থাকুন।”
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ১৩ মে থেকে ২৬ জুলাই, অর্থাৎ দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে কার্গিল যুদ্ধ। পাকিস্তানের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী যুদ্ধে তাদের ৪০০ জন সেনা নিহত হন। আহতের সংখ্যা ৬৬৫। ৮ জন সেনা যুদ্ধবন্দি হন। অপরপক্ষে ভারতের ৫২৭ জন সেনা শহিদ হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন ১,৩৬৩ জন। যুদ্ধবন্দির সংখ্যা ৫।
অথচ ওই বছরের শুরুতেই বহুদিন পরে ভারত-পাক সম্পর্ক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছিল। দিল্লি থেকে লাহোর পর্যন্ত ‘সদা-এ-সরহদ’ বাস পরিষেবা চালু হয়েছিল। ওয়াঘা-আট্টারি সীমান্ত দিয়েও চলাচল করত বাস। এমনকী কার্গিল যুদ্ধের সময়েও চালু ছিল বাস পরিষেবা। ওই বাসে চেপে লাহোর গিয়েছিলেন তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী । উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে শান্তি স্থাপন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নওয়াজ শরিফ। যদিও তৎকালীন উচ্চাকাঙ্খী পাক সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারফ ভেস্তে দেন যাবতীয় শান্তি প্রক্রিয়া।