আর মৃত্যু নাট্যকর্মী ভূমিপুত্র সুমিত বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই লিখন
কুশীলবের প্রতি
তমাল সাহা
অন্ধকার ঘন হয়ে আসছিল
সময় ফুরায় না, এগিয়ে চলে…
সে বলে, ক্ষণ-মুহূর্ত তো পেরিয়ে যায়
তবে সময়ের অক্ষরগুলি কিভাবে লিখবে সে?
অন্ধকার ঘন হয়ে আসছিল
মহাশূন্যের দিকে তাকিয়ে সে আনমনে।
সে একটি স্পেস চায় এই মহাপ্রাঙ্গণে মাটিতে।
একটু স্পেস চাই! দৌড়তে হবে আরো দ্রুত।
ক্ষতবিক্ষত সময়, দেশকাল আমার কি হবে বলো?
অন্ধকার ঘন হয়ে আসছিল
সে প্রতিদিন প্রতিপলে খুন হচ্ছিল
পথে প্রান্তরে অরণ্যে নদীকুলে খেতে খামারে শ্রমিক মহল্লায়—
ভারতবর্ষের এই বিশাল জনপদে।
অন্ধকার ঘন হয়ে আসছিল
সে তামাম ভারতবর্ষ জুড়ে পুরোপুরি একটি নাটক হতে চেয়েছিল
নাট্যকার তো বটেই, সেই নাটকের নির্মাণ হবে তার হাতে
তার হাতেই থাকবে অদৃশ্য নির্দেশনার দায়
সে শারীরিক বিভঙ্গে নাটক করতে চেয়েছিল গানে সংলাপ আবৃত্তীয় উচ্চারণে।
অন্ধকার ঘন হয়ে আসছিন
সে বলছিল, একটু স্পেস চাই, আরো একটু বড় স্পেস চাই।
সংগ্রাম সংস্কৃতি জনতা মিশে যাবে মাটির ময়দানে
সে স্পার্টাকাস হতে চেয়েছিল
হতে চেয়েছিল ভোমা
বারবার বলছিল আকুতি আর্তনাদে
ভাত! ভাত! ভোমা ভাত খাবে বাবু, ভোমারা ভাত খাবে
নাহলে সে শেষ পর্যন্ত হয়ে যাবে গুণধর মুর্মু।
অন্ধকার ঘন হয়ে আসছিল
সে দৌড় শুরু করেছিল
বিস্তৃত হচ্ছিল লোকালয় —
গাঁ-গঞ্জ থেকে শহর নগর বন্দর
স্পেস চাই! স্পেস চাই!
সে দৌড়চ্ছিল দ্রুত থেকে দ্রুততর
মাটিতে প্রতিটি পদক্ষেপ মাটির সঙ্গে সেঁটে থাকা, এ এক আশ্চর্য নির্ভরতা!
সে দৌড়চ্ছে ক্রমবর্ধমান তার গতি।
শেষ পাকের ঘন্টা বেজে চলেছে
সে ভিকট্রি ল্যাপের দিকে দৌড়চ্ছে…
কুশীলবের পোশাক তার শরীরে, দ্রুত তার শ্বাস চলাচল…
নাটকের ব্যাটন তার হাতে
সেই দৌড়চ্ছে
মাটিতে কান পেতে শোনো, তার পদক্ষেপ