অবতক খবর,৩ অক্টোবর: এই নবাবের শহর মুর্শিদাবাদ জেলা হাতির দাঁতের শিল্পকর্মর জন্য বিদেশিদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিল হস্তি দন্ড শিল্প। এই জেলার শিল্পীরা যেকোনো আকৃতির দাঁত থেকে নজর কাড়া সামগ্রী তৈরি করতে পারতেন। ওরি চিহ্নে কলম ঠাপি গিরদি, চোরশে এইসব যন্ত্র দিয়ে নিপুন ভাবে হাতির দাঁতের উপর ফুটো কারুকার্য।

১৯৯২ সালের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন আজ এইসব শিল্পীদের কর্মহীন করে তুলেছে। এইসব শিল্পীরা এবার কোরিয়ান মার্বেলে তৈরি মা দুর্গার মূর্তি তৈরি করছেন কলকাতার এক পুজো মন্ডপের জন্য। মুর্শিদাবাদের এইসব শিল্পীরা কলকাতার একটি পুজো মন্ডপের জন্য মা দুর্গার প্রতিমা তৈরি করছেন। এক সময় মুর্শিদাবাদ জেলায় এই হাতির দাঁতের শিল্প ভারত বর্ষ ছেড়ে বাইরেও তার সুনাম অর্জন করেছিল কিন্তু এই শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই শিল্পকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তারা বসে না থেকে কোরিয়ার থেকে মার্বেল নিয়ে এসে নানান ধরনের মূর্তি তৈরি করেন।

এবার বহরমপুর খাগড়া এলাকার এ শিল্পীরা প্রায় ছয় মাস সময় ধরে কোরিয়ান মার্বেলে সাদা ধবধবে, সূক্ষ্ম হাতের কাজে মা দুর্গার অপরূপ প্রতিমা তৈরি করেছেন। এ বিষয়ে বহরমপুর খাগড়ার সৌরিন ভাস্কর তিনি জানান যে আমাদের এখানে ১২ জন শিল্পী তারা পূর্বে হাতির দাঁতের কারুকার্য করতো। কিন্তু বর্তমানে হাতির দাঁতের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে এখন কোরিয়ান থেকে সাদা মার্বেল এনে নানান ধরনের মূর্তি তৈরি করি।

এবার আমরা কলকাতার একটি পুজো মন্ডপের জন্য মা দুর্গার বরাত পায়। সেই মতো আবরা কাজ শুরু করি। আমাদের মা দুর্গা প্রতিমা তৈরি হওয়ার শেষের মুখে এই কাজ করতে আমাদের ছ মাস সময় লেগে গিয়েছে। তিনি জানান আমরা যেহেতু হাতির দাঁতের কাজ করেছি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই কাজ বন্ধ হওয়ার ফলে আমরা কোরিয়ান মার্বেলের কাজের দিকে ঝুকে পড়ি। যদিও এই শক্ত পাথরের উপর কাজ করতে আমাদের নানান ধরনের সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতে সহযোগিতা নিতে হয়েছে।

এই কাজ করতে গিয়ে প্রচন্ড পরিমানে পাথর থেকে ডাস্ট হয়, যার ফলে আমাদের এই কাটিংয়ের জন্য নানান ধরনের লেটেস্ট যন্ত্রপাতির ক্রয় করতে হয়। তিনি আরো জানান এই মার্বেলটা কোরিয়ানরা তৈরি করেন, যেহেতু এখন বাইরে থেকে মাল ক্রয় করার অনেক রকম ব্যবস্থা হয়েছে এইটা ভায়া বোম্বে হয়ে আসে না হলে চেন্নাই হয়ে আসে। তিনি আরো জানান আমরা অবশ্যই উচ্চমানের শিল্পীরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি। যার ফলে কোন জাগায় কাজের জন্য আমাদেরকে যথেষ্ট সম্মান দেয়া হয়। তিনি আরো জানান আমরা যেটি তৈরি করেছি এটা যদিও ছয় মাসের মধ্যে আমরা তৈরি করে ফেলেছি কিন্তু এটা এক বছরের কাজ। যেহেতু আমরা এই জাগায় দুর্গা প্রতিমার বরাত পাওয়ার ফলে ১২ জন শিল্পী দিন রাত এক করে এই কাজ উঠিয়েছি।

আমরা জানি এই কাজ দেখে অনেকেই খুশি হবেন এবং আমার রা ভবিষ্যতে আরো অনেক কাজ পাবো। দিনে আরো জানান যেকোনো মানুষের মূর্তি ঠাকুরের মূর্তি আমরা ছবি দিলেই তৈরি করে দিতে পারি। তিনি আরো জানান হস্ত নির্মিত কোরিয়ান মার্বেলের দুর্গা মা মূর্তির জন্য মিরর ফিনিস অফার করে থাকি। আমরা বাড়ির সাজসজ্জা এবং ব্যাক্তিগত পছন্দ অনুসারে যেকোনো আকারে ঠাকুরের মূর্তি মানুষের মূর্তি এবং মন্দিরের কাজ করে থাকে।

আজ এই নবাবী জেলার হাতির দাঁতের যে কুটির শিল্প মুর্শিদাবাদ জেলায় গড়ে উঠেছিল তার শেষ হওয়ার পর আবার শিল্পীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে, কোরিয়ান মার্বেল। এই কাজ করে শিল্পীরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে।