অবতক খবর : সৌভিক দত্ত : জলপাইগুড়ি : চাবাগান ঘেরা ডুয়ার্সের ছোট্ট শহর মালবাজার। গত কয়েকদিন ধরেই করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ছোট্ট শহরের জনমানসে যেন আতংকের সৃষ্টি করেছে। বিগত ১৮ দিন ধরেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। সাথে গত কয়েকদিনের করোনায় আক্রান্ত হয়ে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ পেতেই সমগ্র শহর জুড়েই জনমানসে আতঙ্কের পরিমান আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে ৮ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
শনিবার সকালেই শহরের ৮নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শঙ্কর চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। শঙ্করবাবু বেশকিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। সেখানেই করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে শনিবার সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন ওনার মৃত্যু হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ৪ এপ্রিল শংকরবাবুর দাদা রাজেন চক্রবর্তীও করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় উত্তর বঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু ঘটে। ঐদিন দুপুর গড়াতেই খবর পাওয়া যায় শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিমল চক্রবর্তী (৭১) উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয়। তিনিও বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্য জনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং ওনার চিকিৎসা উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলছিলো। চিকিৎসা চলাকালীন রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং চিকিৎসা শুরু হতেই মৃত্যু হয় তার। অপরদিকে বিকেলের প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিলা ছেত্রী (৫২) নামের এক মহিলা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
এই নিয়ে শহরে করোনা সংক্রামিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। মৃত শিলা দেবীর শরীরে কয়েকদিন আগেই সংক্রমণ ধরা পড়লে বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিলো। শনিবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়। রবিবার তার মৃতদেহ পুলিশি নিরপত্তায় শিলিগুড়ি সাহু ডাঙ্গি শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য শিলা দেবীই প্রথম করোনা সংক্রামিত রোগী যার মৃত্যু মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ঘটলো। এর আগে ১৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে ও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতালে।
প্রসঙ্গত মালবাজার পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কোঅর্ডিনেটর সুপ্রতিম দাস জানান, “এপর্যন্ত শহরে সংক্রামিতের সংখ্যা ৬০১ জন তারমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫০৫ জন,এখনো এক্টিভ রয়েছেন ৮১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।শহরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।শারীরিক সমস্যা হলে জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
একদিকে যেমন মৃত্যু ও সংক্রমণ বাড়ছ পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট সহ অন্যান্য উপসর্গের সমস্যা আচমকাই অনেকের শরীরে দেখা দিচ্ছে বলেও তিনি জানিয়েছেন “। করোনা পরীক্ষার পর পজিটিভ ধরা পড়ছে। এতেই শহরে আতঙ্ক ও উদ্বেগ ছড়িয়েছে। অবিলম্বে স্বাস্থ্য দপ্তর ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শহরবাসীর অনেকেই।