অবতক খবর,৭ অক্টোবর: একেই বলে রাজনীতি,যার ক্ষমতা সে রাজা,আর যার ক্ষমতা নেই তার কোন গুরুত্ব নেই। বীজপুর বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের কথাই একসময় শেষ কথা ছিল বীজপুরে। তিনি যেখানেই যেতেন সেখানেই অত্যন্ত সম্মান পেতেন। মুকুল পুত্র হবার সুবাদে তিনি জেলা এবং রাজ্য উভয় স্তরেই যথেষ্ট সম্মানিত হয়ে এসেছেন। কিন্তু তিনি যে দলে থেকে, যে দলের কারণে সম্মান পেতেন, সেই দল ত্যাগ করেই বিজেপিতে যোগদান করেন।
বিজেপিতে গিয়েও তাঁর সম্মান ক্ষুন্ন হয়নি। কিন্তু বিজেপি ছেড়ে তিনি যখন আবার তৃণমূলে এলেন তখন তাঁর ওই মান সম্মান ক্ষুন্ন হয়, তিনি পরিণত হন একজন সাধারণ কর্মীতে। আজ ছিল বিজেপি কাউন্সিলর এবং কর্মীদের যোগদান পর্ব। আর যে সকল কর্মীরা আজ যোগদান করলেন তারা দলে চিনতেন শুধু মুকুল রায় এবং শুভ্রাংশু রায়কে। অর্থাৎ বলতে গেলে তারা ওই দুই ব্যক্তিকে নিয়েই ব্যক্তিগতভাবে দল করতেন।
আর আজ তারা ব্যারাকপুর দমদম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থ ভৌমিক, বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী,যুব নেতা কমল অধিকারী, কাঁচরাপাড়া টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি খোকন তালুকদার, হালিশহর টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রবীর সরকার তাদের উপস্থিতিতে এবং তাদের হাত ধরেই আজ তৃণমূলে যোগদান করলেন। কিন্তু আজ এই যোগদানে খুশি তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা তথা কর্মীরা। কারণ আজ তাদের কাছে এবং তাদের সেই পুরনো পার্টি অফিসেই আসতে হল শুভ্রাংশু রায়কে। যে পার্টি অফিস এক সময়ে তাঁর উপস্থিতিতে এবং তার নেতৃত্বেই ভাঙচুর করা হয়েছিল।
একসময় দেখা যেত,শুভ্রাংশু রায় ঢুকলেই তাঁর জন্য কেউ না কেউ চেয়ার ছেড়ে দিতেন। কিন্তু আজ দেখা গেল উল্টো দৃশ্য। শুভ্রাংশু রায়ের জন্য চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালেন না কেউই।
শুধু তাই নয়, যখন তিনি তৃণমূলের অন্যান্য নেতৃত্বদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন তাঁকে তাঁর মাথাটা নীচু করেই কথা বলতে হচ্ছিল। এই দৃশ্য দেখেই আনন্দে আত্মহারা হন তৃণমূলের কর্মীরা।
আর এসব কথা বলেছেন খোদ তৃণমূলের কর্মীরাই।
তারা বলেন, আমরা খুশি এই কারণেই যে, এক সময় এই শুভ্রাংশু রায়ের নেতৃত্বেই অনেক অত্যাচার হয়েছিল এই বীজপুরে। তাঁর নেতৃত্বে ভাঙচুর হয়েছিল পার্টি অফিস। তাঁর বাড়িতে সাধারণ মানুষ দেখা করতে গেলে তাঁর সাগরেদরা বলত তিনি ব্যস্ত আছেন। কিন্তু এদিকে ঘরে এসির হাওয়ায় বসে তিনি হাসি মজা করছেন। কিন্তু আজ তিনিই আমাদের নেতাদের সঙ্গে মাথা নিচু করে কথা বলছেন। আর এই দৃশ্য দেখে আমরা অত্যন্ত খুশি।
রাজনীতিতে কখন যে কি হয় তা বোঝা মুশকিল তবে আজকের এই ঘটনা দেখে তৃণমূল কর্মীরা বলছেন, এটি একটি ঐতিহাসিক দিন।
এখন রাজনীতিতে যার ক্ষমতা সেই নেতা, আর যে ক্ষমতাহীন সে হয় ন্যাতা।
কিন্তু এইসব কান্ড দেখে সাধারণ মানুষ বলছেন,এইসব দেখে বিভিন্ন দলের নেতা কর্মীদের শিক্ষা নেওয়া উচিত যে,ক্ষমতার অপব্যবহার কখনোই করা উচিত নয়। ক্ষমতায় থাকলে মানুষ অনেক কিছুই করে, কিন্তু যখন ক্ষমতা থাকে না তখন তার গুরুত্বও থাকে না। কিন্তু মানুষ সব মনে রাখে। সুতরাং ক্ষমতায় থাকুন বা না থাকুন, মানুষের জন্য কাজ করুন, আত্ম অহং ছেড়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান
কারণ কোনকিছুই চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতার অহংকার করা উচিত নয়।