অবতক খবর,৩০ অক্টোবর: বিজেপির তরফ থেকে দাবি করা হয় গোয়াতে তৃণমূল কংগ্রেসের কোন সংগঠন নেই। তাই তৃণমূল কংগ্রেস চাইলেও কিছু করতে পারবে না গোয়াতে।
সদ্য গোয়া সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসন্ন ২০২২ এ গোয়ার বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২৪ এ লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে পাখির চোখ করে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
মুখ্যমন্ত্রী তিন দিনের সফরে যে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তা অস্বীকার করতে পারছেন না রাজনৈতিক মহল। মমতার গোয়া সফরকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই একে অপরকে ডেকেছেন বিরোধী নেতারা। এবার সেই আগুনে যেন ঘি ঢাললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অধিকারী পুত্র এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, স্যান্ডো গেঞ্জীর যেদিন বুক পকেট তৈরি হবে,সেই দিন প্রধানমন্ত্রী হবেন দিদিমণি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরোটাই ওই আকাশ কুসুম কল্পনা।
কার্যত সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে এহেন বাক্যবাণে আক্রমণ করে ভালো চোখে দেখছেন না রাজনৈতিক মহল একাংশ।
যদিও বিজেপির তরফে দাবি করা হয় গোয়াতে তৃণমূল কংগ্রেস কোন সংগঠন নেই। তাই তৃণমূল কংগ্রেস চাইলেও কিছু করতে পারবে না। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে হালকা চোখে দেখছে পদ্ম নেতাদের একাংশ।
এদিকে গোয়াতে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছালেও আগেই ঘাসফুলের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে যে,মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ও ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে এবং কালি মাখানো হয়েছে। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়া পানাজি বিমানবন্দর ত্যাগ করার পরেও সেখানে কিছু জনগণ কালো পতাকা দেখায় এবং গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকে বলে অভিযোগ করেন। পুলিশ ততক্ষণে তাদেরকে শনাক্ত করে। সূত্রের খবর,ওই বিক্ষোভকারীদের সকলকেই এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত।
তৃণমূল কংগ্রেসের গোয়া শাখার তরফ থেকে টুইট করে একটি ছবি পোস্ট করে। সেখানে সেই ছবিতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ শাওয়ানকে নিজের পায়ের নিচে চেপে ধরেছেন। এই ছবি সামনে আসার পর থেকেই নতুন করে গেরুয়া শিবিরের আক্রমণে মুখে পড়ে তৃণমূল। এই ঘটনার পরেও মমতার ছবি দেওয়ার বেশি বেশি কিছু পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে। আমরা সবাই জানি এটা গোয়ার সংস্কৃতি নয়। তিনি আরো দাবি করেছেন, বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। কারণ যে ঠিকাদাররা ওই পোস্টার হোডিং লাগিয়েছিল এখন সমস্ত ভাঙচুরের জন্য তাদের নিজস্ব পকেট থেকে অর্থ প্রদান করতে হবে। অন্যদিকে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, ফরওয়ার্ড ব্লক পার্টির নেতা বিজয় স্যার দেশাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেন তৃণমূল নেত্রী। আর যেহেতু গোটা ফরওয়ার্ড ব্লক পার্টি বিজেপি জোট সঙ্গী তাই বিজয় সর্দেসাইকে কাছে টানতে বিজেপি বিরোধী দলগুলোকে একটি জোরালো বার্তা দিতে পারেন মমতা। সেইসঙ্গে 2024 সালের নির্বাচনে আমারও বিরুদ্ধে মুখ হিসেবে মমতার নাম চূড়ান্ত করে করার জন্য শাওয়াল করা যেতো।
সেইমতো জোড়া ফুলের সঙ্গে গোয়ার ফুটবলার পার্টি নির্বাচন বোঝাপড়া অংক কষতে শুরু করে দিয়েছেন অনেক নেতা। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত ঘরের ঘরোয়া রাজনীতিতে যেমন শোনা যাচ্ছে মমতার সঙ্গে দেখা করেছেন গোয়ার ফুটবলার পার্টির নেতা বিজয় সরদেশাই। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়ার সফরকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তার মন্তব্য টাকা দিলে এমএলএ এমপি কিনতে পাওয়া যায়। বাংলার সাধারন মানুষের টাকা লুট করে মমতা ব্যানার্জি গোয়ায় গেছেন এমএলএ এমপি কিনতে। দিদি এতে বিপাকে পাঠানো যাবে না। তার জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করা জরুরি।
তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্যই দাবি গোয়ার কংগ্রেসের শক্তি দুর্বল হয়েছে। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জার্সি গায়ে চাপিয়ে গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুই জিন হো ফেলে হিরো কংগ্রেস ছেড়ে বিয়েতে গিয়েছিলেন অনেক বিধায়ক। তবুও নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে মরিয়া কংগ্রেস নেতৃত্ব তাদের কথায় বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমছে সাধারণ মানুষের মনে। আর তাতে একমাত্র প্রতিবাদী মুখ নাকি কংগ্রেসই এমনটাই দাবি।