চাকরির দাবী আন্দোলনে ভিড়ে গেল দেবী দুর্গা ও লক্ষ্মী
তমাল সাহা
শেষ পর্যন্ত নব প্রজন্মের যোগ্য মেধা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের চাকরি দাবীর আন্দোলনে দুর্গতিনাশিনী দুর্গা ও ধনধান্যদত্রী লক্ষ্মী দেবী মান্যতা পেয়ে গেলেন। দুই দেবী হয়ে উঠলেন লড়াকুদের সহযোদ্ধা।
ভারতবর্ষের মতো স্বাধীন দেশে এই ধরনের অহিংস প্রতিবাদী আন্দোলন যুগান্তকারী ঘটনা হতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র দুনিয়ার কাছে এই আন্দোলনের পথিকৃৎ।
লিখন কালে এই আন্দোলন ৫৭৫ দিনে পদার্পণ করেছে। তবে পরিতাপের বিষয়, এই ধর্না আন্দোলন মহামান্য হাইকোর্টের কাছে মান্যতা পেলেও পাহাড় থেকে সমতল পর্যন্ত জনবাসীরা উত্তাল হয়ে জনশক্তির ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারেনি। কেন পারেনি– এই প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। রাষ্ট্রনীতিকে কি সাধারণ মানুষ ভয় পাচ্ছেন? রাষ্ট্রীয় নীরব সন্ত্রাস চলছে কি এই উপত্যকায়? মাটি কামড়ে লড়াইকে প্রাণপণ জায়মান রেখেছেন মেধাবী ছাত্ররা। রাষ্ট্রের নিষ্ঠুর চেহারা প্রত্যক্ষ করেছেন মানুষ। ধর্না মঞ্চে রাষ্ট্রীয় দাপট প্রত্যক্ষ হচ্ছে। কার্নিভাল উৎসবে ধর্ণা মঞ্চ থেকে বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দিয়ে ‘গণতান্ত্রিক সাদা কাপড়ের আড়াল’ তৈরি করেছে পুলিশ প্রশাসন।
ছাত্রছাত্রীদের কাছে দুটি শারদ উৎসব ম্লান হয়ে গিয়েছে।এবার বিজয় দশমীতে তারা প্রতীকী অশুভশক্তি নিধনের অভিনয় করেছেন। তৈরি করেছেন মহিষাসুররূপী পার্থাসুর। তৈরি করেছেন চণ্ড মুণ্ড যথাক্রমে প্রশান্তাসুর ও সুবীরেশাসুর। লড়াকু মেধা সম্পন্না কর্মপ্রার্থী দুর্গতিনাশিনীর ভূমিকায় অভিনয় করে অসুরদের বধ করেছেন।
কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার দিন গৃহলক্ষ্মী হিসেবে পূজিত হয়েছেন এক যোগ্যতমা চাকরি প্রার্থী। পুরোহিত হয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করেছেন এক চাকরি প্রার্থী। পাশে উপস্থিত থেকেছেন অসংখ্য লড়াকু প্রার্থীরা দাবী সম্বলিত প্লাকার্ড তাদের হাতে।
শাসকের নির্লজ্জতা নিষ্ঠুরতা এতে প্রমাণিত হয়েছে, প্রমাণিত হয়েছে শাসক প্রজা প্রতারক।
বাঙালির জাতীয় জীবনে এই ঐতিহাসিক লড়াই স্মৃতিময় হয়ে থাকবে।