এবার চৌরিচৌরা লড়াইয়ের শতবর্ষ। ঘটনা ৪ ফেব্রুয়ারি,১৯২২ঃ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
চৌরিচৌরা
তমাল সাহা
শীতকাল ঘন হয়ে এলে
কোথায় কিভাবে আগুন জ্বলে তা ভূমিজ মানুষেরা জানে–
ভারতবর্ষ একদিন উত্তাল বিদ্রোহের গানে।
পেটের দানাপানির দাম বেড়ে যায়
মদ গ্রাস করে জনজীবন–
কৃষাণেরা রাষ্ট্রীয় অসহযোগে নামে।
শস্যজীবীও পিকেটার হয়ে যায়
অন্য এক সংগ্রামে।
মদের দোকানের সামনে চলে পিকেটিং।
ক্রোধী মেজাজে কেঁপে ওঠে বাতাস
কতদিন আর ঔপনিবেশিক ফাই-ফরমাশ?
গ্রেপ্তার হয়ে যায় মাটির মানুষ।
বাস্তবতার অভিঘাতে খুঁজে পায় মান ও হুঁশ।
তারপর জঙ্গি ইতিহাস লেখে চৌরিচৌরা
পরিবেশে উত্তেজনা, অগ্নিভ প্রহরা।
তিনজন কিষানকে খেয়ে ফেলে পুলিশি কার্তুজ।
হাত ক্রমশ বজ্রমুষ্টি হতে থাকে,
হাতে হাত নির্মাণ করে বৃহত্তম বহুভুজ।
বাতাস বলে ওঠে,
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নয়, লড়াইয়ের বিকল্প কিছু নেই।
চতুর্দিকে রব ওঠে, হেই! সামালো হেই!
ভয় কোথায় থাকে?
তিন হাজার লড়াকু আবিষ্কার করে
নতুন অঙ্গার খনি
মাটির গহ্বরে নয়,বুকের গভীরে জেগে ওঠে
সুপ্ত আগ্নেয় ভূমি।
কোথায় পুলিশ, কোথায় রাইফেল, কার্তুজ!
ওই তো অদূরে থানা!
তিন হাজার কৃষাণ,বেজে ওঠে রুদ্র বিষাণ
চারদিক থেকে দেয় হানা।
তিনজন লড়াকুর বদলায়
চৌরিচৌরা চৌকিতে আগুন।
বাইশজন ঘাতক পুলিশ নিহত–
বাতাস বলে ওঠে,
মানুষের ক্ষমতা রাষ্ট্রের চেয়ে বহুগুণ।
গান্ধীজী বলেন,
অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার!
হিংসার কাছে সারেন্ডার!
গর্জে ওঠেন সুভাষ বিরুদ্ধতায়–
এতো বাপুজি! হিমালয়ান ব্লান্ডার।
চৌরিচৌরা! তোকে মনে পড়ে।
কত জনকে কারাদণ্ড,কতজনকে দ্বীপান্তর।
ঊনিশ জনের ফাঁসি—
সেসব লিখে রাখে চৌরিচৌরার প্রান্তর।
চৌরিচৌরা! চৌরিচৌরা! ডেকে যায়
আয়! তোরা লড়াইয়ে ফিরে আয়।