অবতক খবর ২৫ ফেব্রুয়ারিঃ শুক্রবার ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ কলকাতা ট্রামের চলাচলের দেড়শ বছর পূর্তি দিবস হয়ে গিয়েছে। ট্রাম পরিষেবা আমাদের বঙ্গীয় জীবনে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হয়ে গিয়েছে। এই ট্রাম উঠিয়ে দেবার চক্রান্ত চলছে। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ট্রাম কোম্পানিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের কবল থেকে উদ্ধার করে এনেছিল বামফ্রন্ট সরকার এবং তা সরকারি হাতে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। এটি বাঙালির জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
বাঙ্গালীর সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনে ট্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ট্রামে চাপা পড়ে মারা গিয়েছিলেন কবি জীবনানন্দ দাশ। ট্র্রামে চড়ে বাঙালি সারা কলকাতার দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শন করেছে। সেই ঐতিহ্যবাহী ট্রামকে এই সরকার তুলে দেবার চক্রান্ত করেছে। তাদের দুটি যুক্তি ট্রাম এক) শ্লথগতি বিশিষ্ট যান। দুই) এটা রাস্তাকে জ্যামে পরিপূর্ণ করে।
কিন্তু জ্বালানি সাশ্রয়কারী এবং পরিবেশ বান্ধব এই যানবাহন, এর বিকল্প নেই। ট্রাম উঠিয়ে দেওয়ার এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত কেননা এমন একটা জাতীয় ঐতিহ্যকে কিছুতেই ধ্বংস করে দেওয়া যায় না।
জানা গেছে ২০১১ সালে কলকাতার ৩৭টি রুটে ট্রাম চলাচল করতো। ট্রামের সংখ্যা ছিল ২২০ টি। তার মধ্যে ১০০ থেকে ১১০টি ট্রাম চালানো হতো। জরুরিৎপরিষেবার জন্য বাকি গুলোকে মজুত রাখা হতো। এই ২০২৩ সালে কেবলমাত্র দুটি রুটে ট্রাম চলাচল করে। মজুত ট্রামের সংখ্যা কুড়িটি। দিনে চলে মাত্র ১১ থেকে ১২টি। ট্রামের কর্মীসংখ্যাও কমে গিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ৩৭ ট্রামকে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সরকার। এর উদ্দেশ্য কি? তাহলে কোনো কর্পোরেট গ্রুপ কি থাবা দাঁড়িয়ে আছে এর দখলদারিতে!বেলগাছিয়া টালিগঞ্জ কালীঘাট গ্যালিফ স্ট্রিট খিদিরপুর এই পাঁচটি ট্রাম ডিপোতে আছে ৩৫০ কাঠা জমি। ২৩০ কোটি টাকায় এই জমি বিক্রি হয়ে গিয়েছে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে। টালিগঞ্জের জমিতে শপিং মল, গড়িয়াহাটের জমিতে কফি শপ ইত্যাদি নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।