তেভাগা আন্দোলন স্বাধীনতা-পূর্ব কৃষক আন্দোলনের এক সংগ্রামী ইতিহাস।
এপার বাংলা ওপার বাংলা উত্তর-দক্ষিণবঙ্গে ছিল এই আন্দোলনের ব্যাপক বিস্তার। এই সংগ্রামে ৬০ লক্ষ ভাগচাষি ও কৃষাণী যে অংশগ্রহণ করেছিল, পুলিশের সঙ্গে মুখোমুখি সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল তা এক কালজয়ী অধ্যায়।
এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বর মাসে। ১৯২১ সালের এই ডিসেম্বর মাস সেই আন্দোলনের ৭৫ তম বর্ষ।
এই সংগ্রামের শহীদ এবং লড়াকু কৃষকদের সালাম জানিয়ে এই লেখা–
তেভাগা
তমাল সাহা
আরে! মনে পড়ে কি তোর
ওরে অভাগা!
কারা একদিন তুলছিল স্লোগান-
আধা নয় তেভাগা…
আরে! মনে পড়ে কি তোর আমার
কারা একদিন তুলেছিল স্লোগান
জমি যার লাঙ্গল তার…
তেভাগা!
লাঠি-কাস্তে,তীর-বল্লম,দা-বঁটি
রুখে দাঁড়ায় চাষাড়ে বাপ মা বেটি
সে কী লড়াই!
জেগে ওঠে কাকদ্বীপ বসিরহাট
সেই সামলালো! উদ্বেল আকাশ বাতাস
চন্দনপিঁড়ির গর্ভবতী মায়ের লাশ
রক্তে লেখে লড়াকু ইতিহাস।
তোদের কি মনে পড়ে
মোদের দুখের কথা কাহাকে জানাই
হেই সামালো ধান
কাস্তেতে দাও শান—
নিবারণ পণ্ডিতের কথা,
সলিল চৌধুরীর সোচ্চার গান!
সোমনাথ হোরের তেভাগার ডায়েরি ও ছবির রেখা
মা ভাগুনির টহলদারি—
রাইফেল কাঁধে পাহারা দেয় একা?
তোরা কি শুনেছিস
অগ্নিকন্যা ইলা মিত্রের নাম?
তেভাগা! তেভাগা! লড়াকু কৃষক সংগ্রাম।
মৃত্তিকা মা রে আমার
অহল্যা বাতাসী সরলা কত সেসব নাম!
সেসব অনেক কথা
কৃষক সংগ্রামে বাংলা ছিল সেরা।
কি করে তেভাগার কথা ভুলে গেলি তোরা!
এই লড়াইয়ের পঁচাত্তর বছর চলে যায়
তেভাগার কথা তোদের মনে পড়ে না হায়!