অবতক খবর,৫ সেপ্টেম্বর,পূর্ব মেদিনীপুর: ‘পরীক্ষাই দেননি কিন্তু বহাল তবিয়তে শিক্ষক মাসোহারা নিচ্ছেন।’ শিক্ষক দিবসে রাজ্যের টেট দুর্নীতি নিয়ে সরব বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিকাশভবনের সামনে শিক্ষিকাদের আত্মহত্যার চেষ্টার কথা তুলে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ সহ গোটা শিক্ষা দফতরের চরম দুর্দশায় রয়েছে বলে রাজ্য সরকারকে খোঁচা দেন তিনি।

রবিবার কাঁথিতে ‘শিক্ষক দিবস’-এর এক অনুষ্ঠানে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তাঁর দাবি, এ রাজ্যে অনেক শিক্ষকই চাকরির পরীক্ষা না দিয়েই কাজ পেয়েছেন। আর তাঁরা বেতনও পাচ্ছেন। এঁরা ভুয়ো শিক্ষক বলে মন্তব্য করতে শোনা যায় শুভেন্দুকে। ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসে কাঁথির জন মঙ্গল সমবায় সমিতির সভাগৃহে সমাজের বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের মানুষদের নিয়ে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কাঁথি দক্ষিণ ও উত্তর বিধানসভার বিধায়ক অরূপ কুমার দাস ও সুমিতা সিনহা ও কাঁথির প্রাক্তক প্রশাসক সৌমেন্দু অধিকারী সহ বিশিষ্ট জনেরা উপস্থিত ছিলেন

সেখানে বক্তব্য করতে গিয়ে শিক্ষক সমাজের উদ্দেশে নন্দীগ্রামের বিধায়ক আরও বলেন, ‘ভালর পক্ষে থাকবেন, যুক্তির পক্ষে থাকবেন। খারাপ কিছুর পক্ষ নেবেন না। মাথা নত করার দরকার নেই।’ তিনি তুলে আনেন দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের কথা। তাঁর দৃঢ়চেতা মনোভাবের উদাহরণ দেন। তার পর শিক্ষক নিয়োগে রাজ্যে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে রাজ্যের শাসক দলকে কাঠগড়ায় তোলেন শুভেন্দু। রাজ্য সরকারকে একহাত নেন তিনি। বলেন, রাজ্যে ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। বিকাশভবনের সামনে শিক্ষিকাদের আত্মহত্যার চেষ্টার কথা তুলে দুর্নীতি, স্বজনপোষণ সহ গোটা শিক্ষা দফতরের চরম দুর্দশায় রয়েছে বলে দাবি করেন শুভেন্দু।

বর্তমান করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া-সহ যাবতীয় কর্মসূচি সংগঠিত হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার ব্যাপারে এখনও কোনও স্থির সিদ্ধান্ত নিত পারেনি রাজ্যের সরকার। এদিন শুভেন্দু তোলেন সে কথাও। ন্যায়ের লড়াইয়ে শিক্ষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। জানান, মানবাধিকার রক্ষার লড়াইয়ে সবার পাশে থাকাব। যদিও অনুষ্ঠান শেষে সংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এদিন রাজনৈতিক প্রসঙ্গ সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের তরফে ২০১৪ সালের ২০ হাজার টেট উর্ত্তীর্ণ-প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের মধ্য থেকে প্রথম পর্যায়ে ১৬ হাজার ৫০০ ও পরে ধাপে ধাপে বাকিদের নিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। মোট ২০ হাজারের মধ্যে প্রায় ১২ হাজার নিয়োগপত্র পেয়েছেন। বাকিদের নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই মুহূর্তে যেখানে তাঁদের স্কুলে শিক্ষক দিবস পালন করার কথা, সেই জায়গায় তাঁরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন বলে এদিন দাবি করেন শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের সদস্যরা।