একটি মেয়ে। বছর সাতাশ। সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রী। জেএমআই ইউনিভার্সিটিতে পাঠরতা। সাহসী প্রতিবাদী নারীকন্ঠ।
১০ এপ্রিল ‘২০, লকডাউনের নিস্তব্ধ দুপুরে গ্রেপ্তার হয়ে গেল। কেন?
পুলিশ এলো
তমাল সাহা
ঝড়টি কি ছিল এলোমেলো?
পুলিশ এলো
যেমন করে পুলিশের আসার কথা
তেমন করে কি এলো?
পুলিশের সঙ্গে গাড়ি ছিল।
এটা পুলিশের বিশেষ সেল–
সন্ত্রাস বিরোধী সেল না যেন কি বলে!
কে ছড়ায় সন্ত্রাস?
মেয়েটির বুকে তখন ঘনায়মান ত্রাস।
লক ডাউন আর লক আপের
সম্পর্ক কি,আমি বুঝে যাই।
লক ডাউনের সুযোগে
গ্রেপ্তার করা ভীষণ সোজা-ই।
মেয়েটির উপর নির্যাতন হল,
যা হবার তাই হলো স্বাভাবিক।
মেয়েটিকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে
তুললো ভারতীয় পুলিশ।
দশ এপ্রিল লক ডাউন তো,
দুপুরবেলা তখন স্তব্ধ চারিদিক।
জীবনে শুধু যোগ আর যোগ–
মেয়েটি সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত
মেয়েটি দাঙ্গায় জড়িত
মেয়েটি অস্ত্র দখলে উদ্যত
মেয়েটি হত্যাকান্ডে উন্মত্ত।
মেয়েটির নামে আঠারোটি অভিযোগ।
মেয়েটি বলে,এ তো শুধু অঙ্ক–
যোগ আর যোগ!
এত যোগ! নয় কিছুই বিয়োগ?
ঘিঞ্জি পরিবেশে গাদাগাদি
তিহার জেলে আছে মেয়েটি।
ফোন করা যাবে না প্রিয়ের কাছে
চিঠি যাবেনা প্রিয়ের কাছে
দেখা হবে না প্রিয়ের সাথে।
পুলিশ বলে,
কী যে নির্বোধ মেয়ে তুই!
কোভিড ১৯-এর ভয় আছে
দেখাটেখা, কথাবার্তা হবেনা কিছুই।
কয়েদখানায় আছিস
তার মানেই নিরাপদ কোয়ারেন্টিন।
তিনবার আবেদন করেও
মেয়েটির মেলেনি জামিন!
মেয়েটি সিএএ-র বিরুদ্ধে
গড়ে তুলেছিল প্রতিরোধ।
নেতৃত্ব দিয়েছিল–
শত শত মানুষের পথ অবরোধ।
মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা,
তিহার জেলে মেয়েটি ঘিঞ্জি পরিবেশে,
ইউএপিএ-আইনের অধীন।
জামিন পাবে কি মেয়ে? বড় কঠিন।
জেলের বাইরে গণতন্ত্র হাই তোলে
গর্ভের আঁধারে প্রিয় প্রজন্ম খেলে
কোথায় নিরাপত্তা?
এতো মানবাধিকার হত্যা!
এবার তবে বলি মেয়েটির নাম
সাফুরা জারগার।
আর চুপ থাকবে কতো!
কবে হবে দ্রোহে- নির্মাণে সোচ্চার?