অবতক খবর,২ ডিসেম্বরঃ পাঁচের দশকে আসানসোল মহকুমায় বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা কারখানার মধ্যে অন্যতম ছিল ‘ঢাকেশ্বরী কটন মিল’। বস্ত্র উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে হীরাপুরের চাপড়াইদ গ্রামের নিকট এই কারখানা স্থাপন করেছিলেন সূর্য কুমার বসু। এর পূর্বে তাঁর উদ্যোগে অধুনা বাংলাদেশের ঢাকা জেলার নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষা নদীর তীরে ঢাকেশ্বরী কটন মিল গড়ে উঠেছিল। দেশভাগের সময় তদান্তীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার সূর্য কুমার বসুর কয়েকটি কাপড়ের কল বলপূর্বক অধিগ্রহণ করে। যে কারণে তিনি বাধ্য হয়ে ভারতে পাড়ি দেন।
হীরাপুরের দামোদরের তীরবর্তী চাপড়াইদ মৌজার বিস্তীর্ণ জমি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সূর্য কুমার বসুকে প্রদান করা হয়েছিল।
১৯৫২ সাল থেকে সফল ভাবে ঢাকেশ্বরী কটন বস্ত্র উৎপাদন শুরু করে। কারখানা স্থাপনের ফলে গড়ে ওঠে কর্মীদের আবাসন কলোনি যা সূর্যনগর নামে পরিচিতি লাভ করে। জানা যায়, কারখানা স্থাপনের গোড়ার থেকেই আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত ছিলেন সূর্য কুমার বসু। কারণ সেই সময় পূর্ব পাকিস্থানে তাঁর সবকয়টি কাপড়ের কল সেখানকার সরকার বলপূর্বক অধিগ্রহণ করে । যে কারণে পাঁচের দশক থেকেই বকেয়া পাওনা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এর ফলে কারখানায় উৎপাদনে ব্যঘাত ঘটার কথা শোনা যায় না। শ্রমিক অসন্তোষ ও আর্থিক সঙ্কট সহ আরও বিভিন্ন কারণের জন্য মাত্র প্রায় দশ বছর কারখানাটিকে চালু রাখা সম্ভপর হয়েছিল। ১৯৬৩ সালে সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয় ঢাকেশ্বরী কটন মিল।
অনেকদিন আগে জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে পরিণত হয়েছে। ওই জঙ্গলাকীর্ণ স্থানের মধ্যে এখনও দন্ডায়মান সে সময় কারখানার জন্য নির্মিত একটি সাবস্টেশনের কয়েকটি উচ্চতা বিশিষ্ট মজবুত দেওয়াল।
স্থানীয় মানুষরা জানাচ্ছেন সেই সময় মোটা কাপড় তৈরি হত। বর্তমানে শ্মশানভুমি হয়ে পড়ে আছে ঢাকেশ্বরী কটন মিল। তবে রাজ্য সরকার এই জমি অধিগ্রহন করে নতুন শিল্প গড়ে তুলতে চাইছে। সেইকারনে আবার নতুন প্রাণ সঞ্চার হয়েছে ঢাকেশ্বরী এলাকায়।