অবতক খবর : শনিবার রাতে বাসন্তী থানা এলাকার ফুল মালঞ্চর চাতরাখালি এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায় তৃণমূল যুব কর্মী জিয়ারুল মোল্লাকে। রাত থেকেই পরিবারের অভিযোগ, এই খুনের ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব রয়েছে।
নিহতের স্ত্রী অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামীকে তৃণমূলের লোকেরা খুন করেছে।স্ত্রী মনোয়ারা মোল্লার দাবি, শনিবার বিকেলে জিয়ারুলের কাছে ফোন আসে, তাকে টাকা ফেরত দিতে চেয়ে ডাকা হয়। তারপর রাতে বাড়িতে ফোন আসে জিয়ারুলের গুলিবিদ্ধ দেহ পড়ে আছে। তার স্ত্রী সরাসরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। তার দাবি, মাদারে যোগ দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। যোগ না দিলে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি আসে। স্ত্রী শুধু নন দুই মেয়ে ও এক ছেলেও তাদের বাবার খুনের পিছনে মাদার তৃণমূলের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, অত্যন্ত সুনিপুণ পরিকল্পনা। চাতরাখালি গ্রামের রাস্তায় কোথায় স্পিড ব্রেকার অর্থাৎ বাইক বা যানের গতি কমে, সবটাই নজরদারিতে রেখেছিল আঁততায়ীরা। বাসন্তী থানা এলাকার ফুল মালঞ্চ চাতরাখালি গ্রামে তৃণমূল যুব কর্মীর খুনের ঘটনায় এমনই পর্যবেক্ষণ পুলিশের। শুধু তাই নয়, এই খুনের ঘটনায় একাধিক সন্দেহভাজন যোগ রয়েছে বলেই পুলিশের দাবি। যদিও রবিবার রাত পর্যন্ত কাউকেই আটক বা গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বারুইপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ। তিনি বলেন, সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে পরিবারের তরফে আনা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে নিহত জিয়ারুল মোল্লার মোবাইল ফোন নম্বরের সিডিআর বা ফোন কল ডিটেলস খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। শুধু তাই নয় পুলিশের প্রাথমিক দাবি, এই খুনে ব্যবহৃত হয়েছে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র। কারণ মাথা ও পেটে লাগা গুলি দুটি ভিন্ন ধরনের।
নিহতের বড় মেয়ের বক্তব্য, এই এলাকায় জিয়ারুলের জনসমর্থন রয়েছে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাদারের তরফে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। তারা আশঙ্কা করছিলেন যে জিয়ারুল মাদারে যোগদান না করলে তারা হেরে যেতে পারেন। তাই চাপ সৃষ্টি করা এবং প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। পরিবারের দাবি মতও সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে পুলিশের এক কর্তা জানান, এই খুনের নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক যোগ রয়েছে কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পরিবারের দাবি, জিয়ারুলের কাছে বিকেলে একটি ফোন এসেছিল। সেই ফোন পেয়ে বেরিয়ে যান তিনি। গতকাল রাতে দেহের পাশে থেকেই জিয়ারুলের ফোন মিলেছে। সেটি এই মূহুর্তে পুলিশের কাছে । সিডিআর খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কার ফোন পেয়ে বেরিয়ে ছিলেন তিনি। বাড়ি থেকে বেরোনোর পর কার কার ফোন এসেছিল। শেষ কার সাথে কথা হয় সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের। একইসঙ্গে টাওয়ার লোকেশন দেখা হচ্ছে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন। আর যেখানে দেহ মিলেছে, সেখানে কখন এসেছিলেন তিনি।