বিপ্লবী মদন লাল ধিংরার আজ আত্মবলিদান দিবস।
অবতক-এর বিশেষ প্রতিবেদনঃ
যে চেতাবনি দেহটি পরিবার গ্ৰহণ করেনি
তমাল সাহা
বিপ্লব চেয়েছিল যে তরুণটি আর অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছিল
হায়!এই ছিল তার জীবনের একমাত্র অপরাধ।
তাই তাকে ত্যাজ্য পুত্র করা হয়েছিল,সে খবরও প্রকাশিত হয়েছিল সংবাদপত্রের পাতায়।
আমি তার পায়ের পাতা ছুঁতে পারিনি।
যে তরুণটির হাতে কার্তুজ ছিল, প্রকাশ্যে হত্যা করেছিল আর্মি অফিসার উইলিয়াম হাট কার্জন উইলিকে,
তার হাতের কব্জিতে কত জোর ছিল আমি তা জানি।
যে তরুণটি বুঝেছিল ভারতবর্ষ শাসক নয়,ঢুকে পড়েছে লুটেরার দল,আর দেশীয় শিল্পগুলি ধ্বংস করে দিতে চায়
তার হাতে আমি দেখেছি দাদাভাই নওরোজির লেখা বইটি ‘পভার্টি অফ ইন্ডিয়া’।
তখন থেকেই তার বুকের ভেতর যে একটা ফার্নেস তৈরি হয়েছিল সেটা আমি জানি।
যে তরুণটি বলেছিল, ধ্যাত্তেরি তোর সাহেবিয়ানা! বিদেশি কাপড়ে তৈরি ব্লেজার বয়কট করো,তুলেছিল স্লোগান।
আর কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিল
তার হিম্মতদারির কথা আমি পরে জেনেছি।
যে তরুণটি শ্রমিক সংগঠন গড়তে হাত পাকিয়েছিল তার কর্মকাণ্ডের কথা সে এক ইতিহাস।
যে তরুণটি বলেছিল, আমি তো দেশের জন্য হত্যা করেছি, তা তো আমি জানি।
আমি তো আত্মবলিদান দিতে রাজি। আমার উকিল নিয়ে কি হবে? আমার তো একটাই কাঙ্ক্ষিত প্রার্থনা, আত্ম বলিদান।
সেই তরুণটির আলোকচিত্র আমি দেখেছি, তার মুখের দিকে কতবার যে তাকিয়েছি!
যে তরুণটির ফাঁসি হয়েছিল পেন্টনাভিল জেলে,আর আকুতিতে বলেছিল,আমি আবার আসতে চাই ভারত মাতার কোলে। আবারও দেব প্রাণ, আত্মবলিদান। শেষধ্বনি ছিল তার– বন্দেমাতরম!
তার মৃতদেহটি তার পরিবার গ্রহণ করেনি। তরুণটি পরিবারের কাছে নিশ্চিত হয়েছিল ত্যাজ্য,
আমাদের কাছে এই তরুণটি আজীবন গ্ৰাহ্য।