অবতক খবর,২৮ ডিসেম্বর: বীজপুর তৃণমূল দল ক্রমাগত যে বিজেপির দখলদারিত্বের দিকে চলে যাচ্ছিল, বীজপুর তৃণমূল দলের কর্মীরা চলে যাচ্ছিল গেরুয়া শিবিরে বিজেপি দলের দিকে। কিন্তু এখন সেটাতে ভাটা পড়েছে সেটি সঠিক। এর মূল ভূমিকায় রয়েছেন জেলা সম্পাদক সুবোধ অধিকারী, একথা অনস্বীকার্য। কিন্তু তৃণমূল দলে এত ঘন ঘন নেতার পরিবর্তন কোন সময়ে প্যাড বিহীন, কোন সময়ে প্যাডে নাম লিপিবদ্ধ থাকছে। এইসব নিয়ে সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।

 

২৩শে মে-র পর দলের কর্মীদের মধ্যে গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার নিশ্চিত ঢল নেমেছিল। কাঁচরাপাড়ার জনা চারেক কাউন্সিলর বাদে এবং হালিশহরের কাউন্সিলররা সুদূর দিল্লিতে চলে গিয়ে বিজেপির আশ্রয় নিয়েছে। এই ঢলটিকে রোধ করার প্রথম পর্যায়ে ২৯শে মে চলে আসেন নৈহাটিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অনেকটাই এই অঞ্চলে এই অবস্থাটা সামাল দেন। তিনি সেদিন এই অঞ্চলের অবিসংবাদিত নেতা মৃণাল সিংহ রায়ের বোন সোনালী সিংহরায়কে মঞ্চে তুলে নিয়ে তাকে সাবাস জানান এবং তাঁর দাদার মৃত্যু ঘটনার একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন একটি আশ্বাস দিয়ে তাঁর কার্যকলাপ, সাহসিকতা দেখে তিনি তাঁকে মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই অঞ্চলের কনভেনার করে দেন এবং তিনি নিরাপত্তাও পেয়ে যান।

পরবর্তীতে মুকুল রায় ও শুভ্রাংশু রায়ের দুর্গ বলে কথিত বীজপুরকে সামাল দেওয়ার জন্য তিনি চলে আসেন কাঁচরাপাড়ায় আদর্শ সংঘের মাঠে, কাঁচরাপাড়ার পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। সেখানে তিনি সুবোধ অধিকারীর হাতে দলীয় পতাকাও তুলে দেন। সুবোধ অধিকারী বিজেপি থেকে তৃণমূলে চলে আসেন। তার আগে আলোরানি সরকারের বাড়িতে এসে আদর্শ সংঘের মাঠে যে প্রস্তুতিসভা নেওয়া হবে সেখানে জেলা নেতৃত্বরা পর্যন্ত চলে আসেন এবং আলোরানির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

২৯শে আগস্ট দায়িত্ব পেয়ে যান ছজন কনভেনার হিসাবে— আলোরানি সরকার, সোনালী সিংহ রায়,সুদামা রায়, অংশুমান রায়,কল্যাণী বিশ্বাস,কানুলাল সরকার। নভেম্বরে উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে বীজপুর দলের চেয়ারম্যান হন সুবোধ অধিকারী। পরবর্তীতে তিনি হন জেলা সাধারণ সম্পাদক। এরপর ১১ ডিসেম্বর নির্মল ঘোষ ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নেতৃত্বে কাঁচরাপাড়া টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি হন খোকন তালুকদার ।‌ বর্তমানে আলোরানি সরকার,সোনালী সিংহ রায় অনেকটাই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন।

অঞ্চলে ইতিমধ্যেই যে সমস্ত অবৈধ দুর্নীতিমূলক কাজ চলছে তার সঙ্গে দেখা যাচ্ছে এই দলের আশ্রিত কর্মী বা সমর্থকরা জড়িত। অনেকসময় যারা নেতৃত্তের পদে রয়েছেন তাদের অদৃশ্য অঙ্গুলি হেলনেই সেই কাজগুলো চলছে। বর্তমানে তৃণমূল দলের এই অবস্থা। এই অবস্থায় সাধারণ কর্মীরা তো বটেই সাধারণ মানুষও বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন।