অবতক খবর,৩০ অক্টোবর: বীজপুর বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের মতিগতি, কথাবার্তা, বিভিন্ন সভায় ভাষণ,বিজেপি পরিচালিত ফেসবুকে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা চলছে। তিনি একটি বিশেষ কূটনৈতিক চাল চালছেন বলে রাজনৈতিক মহলের খবর।

 

তিনি কি চাইছেন,এই প্রসঙ্গে তাদের উত্তর, বিধায়কের আসলে পায়ের নিচের মাটি সরে গিয়েছে। তিনি লাইমলাইটে আসতে চাইছেন। বিরোধী পক্ষ আরো বলছেন, পিতা মুকুল রায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদটি অর্জনের পর বীজপুরে শুভ্রাংশু রায়ের ভারী ভারী পদক্ষেপে বুটের শব্দ শোনা যাচ্ছে। ‌তিনি সর্বভারতীয় নেতাদের উপস্থিতিতে চাকদহতে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ব্যবহৃত দুটি শব্দকে একটু কৌশল করে নিজের উত্তেজনা প্রকাশ করেছেন এবং কর্মীদের উত্তেজিত করতে চেয়েছেন।

রাজনৈতিক মহলের খবর,তার পিতা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী। ‌সুতরাং তাঁর পিতা সহ-সভাপতি পদটি পাবার পর তিনি একটু তেড়ে-ফুঁড়ে উঠেছেন। তিনি বলছেন, দিলীপ দা বলেছেন বদলা এবং বদল দুটোই চাই। তিনি বলেছেন, আমি আগে বদলা চাই, পরে বদল। তাঁর এই কথায় চাকদহের সভায় কর্মীরা বেশ অনুপ্রাণিত এবং চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ‌

তিনি কাঁচরাপাড়ায় জোড়ামন্দিরের সভায় বলছেন যে,এমন দিন আসছে যে তার পিতা মুকুল রায়ের পায়ে ধরতে হবে অনেক নেতাকেই। কোন শ্রেণীর নেতাদের তার পায়ে ধরতে হবে সে কথা তিনি খোলসা করে বলছেন না। কারণ রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, আজ যে তৃণমূল কাল সে বিজেপি, আজ যে বিজেপি কাল সে তৃণমূল। একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ, হেড আর টেল। কিভাবে ঘোরাবেন, তিনি হেড টেল করবেন, তিনিই বুঝতে পারবেন। আসলে এই হেড-টেলের কায়দাটি অনেকেই দেখেছেন। শোলে সিনেমায় প্রতিমুহূর্তেই অমিতাভ বচ্চন ধর্মেন্দ্রকে জিতিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বিজেপি ফেসবুক চ্যানেলে কোন সময়ে হিম্মত দেখিয়ে বলছেন যে,দল থেকে গদ্দারদের তাড়াবার জন্যই তিনি বিজেপিতে এসেছেন। তিনি তার এই শব্দগুলো বাতাসে ছুঁড়ে দিচ্ছেন। কিন্তু কে গদ্দার,কারা গদ্দার সেসব কথা তিনি খোলসা করছেন না। ‌

 

তিনি কোন কোন সময়ে রাজনৈতিক বৈরাগ্য নিতে চাইছেন। এমন আচরণও প্রকাশ করেছেন ফেসবুকের‌ মাধ্যমে। তিনি রাজনীতি ছাড়লে কেমন হয় তা তিনি যাচাই করে নিতে চেয়েছেন ফেসবুকের মাধ্যমে। ফেসবুকের এই বার্তা দেখে অনেকেই মনে করছেন শুভ্রাংশু রায় এখন বিবেকানন্দ হয়ে যাচ্ছেন এবং সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে তিনি এখন বেলুড় মঠের সন্ন্যাসীর মতন জনসেবা করবেন। তো সেই জনসেবার কাজ তিনি এখনই শুরু করে দিচ্ছেন না কেন? তিনি কি ভোগী হয়ে রোগী হতে চাইছেন?

বিরোধী দলের নেতারা সরকারের খরচায় নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এমন বিস্ফোরক মন্তব্যও তিনি করেছেন। তার বিরোধী পক্ষ জানাচ্ছেন যে সরকারি পয়সায় নিরাপত্তা নিয়ে তাহলে তিনিই বা কেন ঘু্রছেন? তিনি তো বড় জনদরদী জননেতা নিরাপত্তা বাহিনী না নিলেই তো হয়! জনসেবকরা কি নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে ঘোরেন? বিবেকানন্দ কি নিরাপত্তা বলয়ে আটকে থাকতেন?তিনি অত সরকারি নিরাপত্তা ঘুরছেন কেন? এই দ্বিমুখী- দ্বিচারিতা দেখিয়ে তিনি কি করতে চাইছেন? তিনি কি লাইম লাইটে আসতে চাইছেন? তিনি যে এখনো নেতা রয়েছেন সেটি তিনি এখনই বা প্রদর্শন করছেন কেন? তাঁর পিতা সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ পাওয়ার আগে এই এত বড় হিম্মতদারগিরি দেখান নি কেন?