অবতক খবর,৬ আগস্টঃ ৭০ দশকের অন্যতম কংগ্রেস নেতা প্রাক্তন লোকসভা সাংসদ দেবী ঘোষাল বার্ধক্য জনিত কারণে আজ প্রয়াত হয়েছেন। ব্যারাকপুর মহকুমা অঞ্চলে একসময়ে দেবী ঘোষালের দৌর্দণ্ড প্রতাপ ছিল। তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়েছিলেন। জেলা কংগ্রেসেরও সভাপতি হয়েছিলেন।
তাঁর জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা তিনি ১৯৮৪ সালে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে সিপিএম নেতা তড়িৎ তোপদারের কাছে অল্প ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন।
তাঁর জীবনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, জ্যোতি বসু বনাম দেবী ঘোষাল মামলা। এই মামলায় মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট একটি উল্লেখযোগ্য রায় দিয়েছিলেন–এ রাইট টু ইলেক্ট নাইদার এ ফান্ডামেন্টাল রাইট নর এ কমন রাইট, ইজ পিওর এন্ড সিম্পল স্ট্যাটুটেরি রাইট।
তিনি ১৯৯৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। ক্রীড়া জগতের সঙ্গে সংযুক্ত একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। রাজ্যের অ্যাথলেট, ফুটবল,হকি ক্রিকেট বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠন ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন।
তিনি বিভিন্ন সময়ে বিদেশ সফর করেছেন। ইংল্যান্ড ইতালি ফ্রান্স পশ্চিম জার্মানি সুইজারল্যান্ড নেদারল্যান্ড ও ভ্রমণ করেছেন।
রাজনৈতিকভাবে তিনি এক সময়ে কংগ্রেস নেতা সৌমেন মিত্রের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
৭০ সালে ব্যারাকপুর মহকুমা অঞ্চলে যে নকশাল বিদ্রোহ হয়েছিল, নকশালদের দমনে তিনি এক সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। এইজন্য তিনি কুখ্যাত দেবী ঘোষাল নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন।
দশকের সূচনায় একটি উল্লেখযোগ্য হত্যাকাণ্ড ঘটে।
সেটি বারাসাত হত্যাকান্ড নামে পরিচিত নকশালা মনে এটি সর্বপ্রথম সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে পরিচিত। ১৯ নভেম্বর ১৯৭০ সাল। এরাত ভোর হতেই দেখা যায় বারাসাতের রাস্তায় কিছু দূর দূর ছটি গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে রয়েছে। পরবর্তীতে জানা যায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে বারো জন।ব্যারাকপুর মহকুমা অঞ্চলে একসময়ে বসন্তের বজ্র নির্ঘোষে উজ্জীবিত হয়েছিল। লাশের বয়স ছিল ২৫ থেকে ৩৫ এর মধ্যে এরা সকলেই আড়িয়াদহ দক্ষিণেশ্বর অঞ্চলে বসবাস করতেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সে সময়ের পরিচিত কংগ্রেস নেতা অজয় ঘোষালের ভাই আদিত্য ঘোষাল খুন হয়ে যান। তখন কংগ্রেসী দাপট। পুলিশ জানায়, এরা নাকি সেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং পুলিশ তাদের খুঁজছিল।
দেবী ঘোষাল বহুবার কাঁচরাপাড়া এসেছেন। নকশাল কর্মী পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগদানকারী প্রকৃতপক্ষে অঞ্চলের অন্যতম সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত মৃণাল সিংহ রায়ের (আবু) সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।