অবতক খবর,২৪ আগস্ট: কয়েক মাস আগেই Zydus Cadila Covid19 Vaccine এর শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালের কথা ঘোষণা করেছিল। তারপর থেকে আর সংস্থাটির পক্ষ থেকে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। এতদিনে ভারতীয় ড্রাগ নিয়ামক বিশেষজ্ঞ কমিটি (SEC) জাইডাস ক্যাডিলার তিন ডোজের কোভিড -19 ভ্যাকসিন ‘ZyCoV-D’-এর জন্য জরুরি অনুমোদনের সুপারিশ করেছে। ZyCoV-D ভ্যাকসিনটি হল দুনিয়ার প্রথম Plasmid DNA Vaccine, যা তিনটি ডোজে দেওয়া হবে। তাছাড়া এই ভ্যাক্সিনটি হল ইন্ট্রাডারমিস ভ্যাক্সিন, যা নিলে হাতে কোনোরকম ব্যথা হবেনা।
প্লাজমিড হল এক ধরনের ডিএনএ যা শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়া কোষে পাওয়া যায়। প্লাজমিড ডিএনএ, ক্রোমোসোমাল ডাবল-হেলিক্স ডিএনএর মতো নয়। এই ডিএনএ কোনো বংশগত তথ্য বহন করে না, তবে এর জিনগুলি অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের মতো সুবিধা দেয়।
প্লাসমিড ডিএনএ ভ্যাক্সিন তৈরীর জন্য, অ্যান্টিজেনকে এনকোড করে ডিএনএর একটি অংশ একটি ব্যাকটেরিয়ার প্লাসমিডে ঢোকানো হয়। অ্যান্টিজেন হল রোগ সৃষ্টিকারী রোগজীবাণুর অংশ যা আমাদের শরীর থেকে অনাক্রম্যতা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এবার এই অ্যান্টিজেন বহনকারী প্লাসমিড ডিএনএ আমাদের শরীরে প্রবেশ করে আমাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরী করে।
প্লাসমিড ডিএনএ ভ্যাক্সিনের সবচেয়ে বড় সুবিধে হল, এটি তৈরী করা সহজ এবং কম খরচবহুল।
জাইডাস ক্যাডিলার ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা
অন্তর্বর্তী বিশ্লেষণে লক্ষ্য করা গেছে যে ভারী উপসর্গযুক্ত আরটি-পিসিআর পজিটিভ কেসের বিরুদ্ধে জাইডাস ক্যাডিলার টিকার ডোজ 66% কার্যকারিতা প্রদর্শন করেছে। এছাড়া মাঝারি অসুস্থদের ক্ষেত্রে 100% কার্যকারী।
এই ভ্যাক্সিনের দুটি ডোজ ব্যবহারেরও একটি ট্রায়াল হয়েছে এবং তাতে তিনটি ডোজের কাছাকাছি ফলাফল পাওয়া গেছে। তবে দুটি ডোজ ব্যবহারের রিপোর্ট এখনো SEC এর কাছে জমা করা হয়নি।
জাইডাস ভারতের 50 টিরও বেশি কেন্দ্রে ZyCoV-D এর ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনা করে, যা দেশের মধ্যে এই ধরনের সবচেয়ে বড় ট্রায়াল। স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে 12-18 বছর বয়সী প্রায় 1000 জন অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা ভারতে কিশোর-কিশোরীদের জন্য প্রথম টিকা পরীক্ষা।
জাইডাস ক্যাডিলার তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে তারা বছরে 10-12 কোটি ডোজ তৈরির পরিকল্পনা করেছে। তাছাড়া বিশ্বের প্রথম ‘প্লাজমিড ডিএনএ’ কোভিড -19 ভ্যাকসিন হিসেবে, ক্যাডিলা হেলথকেয়ারের এই বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন প্রযুক্তির অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই ভ্যাক্সিন নেওয়ার পর কেউই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ বা মারা যাননি। এছাড়া এই ভ্যাক্সিনটি 12-18 বছর বয়সীদের জন্যেও নিরাপদ বলে জানানো হয়েছে। যার ফলে বারো বছরের উর্ধ্বে এই ভ্যাক্সিন দেওয়ার অনুমতিও DGCA ইতিমধ্যে দিয়ে ফেলেছে।
ব্যাথাহীন Intradermal ভ্যাক্সিন
দেশজুড়ে রাজ্যগুলিতে তিনটি ভ্যাকসিন, অ্যাস্ট্রাজেনিকার কোভিশিল্ড, ভারত বায়োটেকের কোভাক্সিন এবং রাশিয়ার গামালেয়া ইউনিভার্সিটির স্পুটনিক ভি প্রদান করা হচ্ছে। এই ভ্যাক্সিনগুলির মাধ্যমে সম্পূর্ণ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দুটি ডোজ নিতে হবে। এই ভ্যাক্সিনগুলি সবই আমাদের পেশীতে নিতে হয়, তাই কয়েকদিন হাতের পেশীতে ব্যাথা থাকে। কিন্তু জাইডাসের ভ্যাক্সিনটি Intradermal হওয়ায়, তাতে ব্যাথা একবারেই হবেনা। ইন্ট্রাডার্মাল ইঞ্জেকশন (ID) হল একধরণের অগভীর ইনজেকশন যা চামড়ার এপিডারমিসের মধ্যেই দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর ফলে হাতে ব্যাথা বা অন্যান্য ভ্যাক্সিনজনিত উপসর্গ দেখা যাবেনা।